সুকুমার সরকার, ঢাকা: একাধিক দাবি নিয়ে বাংলাদেশের (Bangladesh)সিলেটের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন কয়েকশো ছাত্রী। সেই আন্দোলন দমনে বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে পুলিশি (Police) নির্যাতনের অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠল শিক্ষাঙ্গন। শুধু ক্যাম্পাসই নয়, আন্দোলনের রেশ ছড়িয়ে পড়ল বাইরেও। সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় পাতায় নিন্দা আর সমালোচনা। অভিযোগ, রবিবার রাতে ক্যাম্পাসে ঢুকে আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ (Lathicharge), শূন্যে গুলি ছুঁড়ে দমনপীড়ন শুরু করে পুলিশ। তাতে বেশ কয়েকজন জখমও হয়েছেন। সোমবারও জারি রয়েছে অশান্তি। আপাতত বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের সংস্কার, শিক্ষার পরিবেশ ফেরানো, ছাত্রীবন্ধব কমিটি গঠন-সহ একাধিক দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন শুরু হয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই আন্দোলনকারীদের নানা কর্মসূচি ছিল। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের অবরোধ করেন তাঁরা। ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কটের ডাক দেন। দুপুরে উপাচার্য (VC) নিজের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এরপর তিনি ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে আশ্রয় নেন। সেই হলের দরজার সামনেও বিক্ষোভ দেখান ছাত্রীরা।
[আরও পড়ুন: করোনার কাঁটা, বাংলাদেশে স্থগিত ঐতিহ্যের ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’, মনখারাপ বইপ্রেমীদের]
অভিযোগ, ঘেরাওমুক্ত হওয়ার জন্য রবিবার বিকেলে পুলিশকে ডাকেন উপাচার্য। পুলিশ বাহিনী ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে বাধা দেন আন্দোলনকারীরা। তাতেই পুলিশ শূন্যে গুলি ছোঁড়ে এবং শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে। রক্তাক্ত হন বেশ কয়েকজন। সন্ধেবেলা এই ঘটনার রেশ ছিল গভীর রাত পর্যন্ত। আর সোমবার সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা ছেয়ে গিয়েছে এর প্রতিবাদে। ‘রক্তাক্ত সাস্ট’ (ShahJalal University of Science and Technology – SUST) নামে ই-পোস্টার ঘুরছে ওয়ালে ওয়ালে। ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে সমাজের বিশিষ্ট নাগরিক – আন্দোলন দমনে পুলিশের মারের বিরোধিতায় সকলেই সরব। কেউ কেউ এর জন্য সরাসরি উপাচার্যকে দায়ী করেছেন। তিনি পরিস্থিতি ঠিকমতো সামলাতে পারেননি, এটা তাঁর ব্যর্থতা – এই মত বহু বিশিষ্টজনের।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ফের আক্রান্ত হিন্দু ধর্ম, দুর্গার পর এবার ৩৫টি সরস্বতী মূর্তি ভাঙল মৌলবাদীরা]
সবমিলিয়ে, সাস্টের এহেন ঘটনায় গোটা সিলেটই উত্তপ্ত।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ ডেকে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা কখনওই কাম্য নয়। এসব আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সমাধান বের করতে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কমিটি থাকে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কি তেমন নেই? এই প্রশ্নও উঠছে বিভিন্ন মহলে।