কৃষ্ণকুমার দাস: আলোর উৎসব হোক আলোকময়, শব্দদানব যেন সেই উৎসবের রেশ কেটে না দেয়। সেই কারণে শব্দবাজিতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছেন সবাই। কালীপুজো, দীপাবলির (Diwali) দিন কলকাতার কোথাও শব্দবাজির দাপট দেখা যায়নি। কিন্তু তাতেও রেহাই নেই। লাখো লাখো আলোর বাজি পোড়ার ফলে নিঃশব্দেই কলকাতার বাতাসে মিশেছে দূষণের (Pollution) তীব্র বিষ। পরিসংখ্যান বলছে, দেশের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত শহর রাজধানী দিল্লি। আর কালীপুজোর পর কলকাতার (Kolkata) দূষণমাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছে দিল্লিকে। বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ণ ধূলিকণার পরিমাণ সমান। দূষণের মাত্রা ৫০০ ppm.
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কালীপুজো, দীপাবলিতে কলকাতায় শব্দবাজি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকায় প্রচুর আতসবাজি পুড়েছে। রংমশাল, তুবড়ির আধিক্য ছিল বেশি। আর এসব আলোর বাজির হাত ধরেই চুপিসাড়ে বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়েছে অনেকটাই। বলা হচ্ছে, রংমশালই সবেচেয়ে বেশি দূষণের জন্ম দেয়। কারণ, নানা রঙের আলো তৈরির জন্য এতে ব্রোমাইড, ক্যাডমিয়াম, জিঙ্ক, সালফারের মতো রাসায়নিক পদার্থ (Chemicals) মিশে থাকে। তা পুড়ে যে ধোঁয়া হয়, সেটা বাতাসে মিশে দূষণের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। কলকাতায় ঠিক সেটাই হয়েছে।
[আরও পড়ুন: আবারও দৃষ্টি হারাল নাসার হাবল টেলিস্কোপ! কী জানালেন আশঙ্কিত বিজ্ঞানীরা]
বাজির দৌরাত্ম্য রুখতে কালীপুজোয় কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় পুলিশের টহলদারি ছিল নিয়মিত। কিন্তু বেহালা, বেকবাগান, সল্টলেকের (Salt Lake) মতো এলাকায় যেখানে বহুতলের (multistoried building) সংখ্যা বেশি, সেসব বহুতলের ছাদে প্রচুর আতসবাজি পোড়ানো হয়েছে এবং সেখান থেকেই দূষণ ছড়িয়েছে। কারণ, বহুতলের ছাদে নজরদারি পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য নাগরিকদেরই সচেতন হওয়া প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা (Environmentalist)। এমনিতেই শীতের প্রাক্কালে বাতাসে ধুলোকণার পরিমাণ একটু বাড়ে। তারউপর এবছর সেই মাত্রা আরও বেশি হওয়ায় চিন্তা বাড়ছে। এসবের প্রভাব পড়বে নাগরিক জীবনে।
[আরও পড়ুন: একবার চার্জ দিলেই চলবে ৩০ কিমি! ব্যাটারিচালিত সাইকেল তৈরি করে তাক লাগালেন সিউড়ির শিক্ষক]
এদিকে, দূষণে জেরবার দিল্লি। ধুলো কমাতে এই মুহূ্র্তে রাস্তাগুলিতে ১১৪ টি ট্যাঙ্কার থেকে জল ছড়ানো হচ্ছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নির্মাণকাজ। এই মুহূর্তে আনন্দবিহারে দূষণের মাত্রা ৬০০ PPM’এর বেশি। কলকাতা তার চেয়ে সামান্য কম। যা কলকাতার তুলনায় অনেকটা বিপজ্জনক মাত্রা।