সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বনদপ্তরের আধিকারিককে উদ্দেশ্য করে কুকথার জের। অবশেষে দলের সিদ্ধান্ত মেনে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিলেন অখিল গিরি। হোয়াটসঅ্যাপে মুখ্যসচিবের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেই দাবি তাঁর।
সোমবার তিনি বলেন, "দল বলেছে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ইস্তফা দিয়েছি। আমি বিধানসভার সদস্য। তাই যাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও কথা বলব না। আমাকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। তাই দিয়েছি।" নিজের অবস্থানে একেবারে অনড় অখিল গিরি। তাঁর যুক্তি, "আমি গরিব মানুষের জন্য লড়াই করেছি। বনদপ্তরের আধিকারিকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। যা করেছি মানুষের জন্য করেছি। আমার কাজের জন্য অনুতপ্ত নই। তবে উত্তেজনার বশে আধিকারিকের উদ্দেশে যে কথা বলেছি, তার জন্য অনুতপ্ত। মুখ্যমন্ত্রীর কাজে ক্ষমা চাইব। কোনও আধিকারিকের কাছে নয়।" কারামন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেও বর্তমানে অখিল গিরি রামনগরের বিধায়ক। তিনি বলেন, "আমি বিধায়ক। ২০২৬ সাল পর্যন্ত বিধায়ক আছি। এলাকার জন্য কাজ করব। দল যা কাজ দেবে, সেইমতো করব।" বনদপ্তরের কর্মীরা দুর্নীতিতে যুক্ত বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ তাঁর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "গ্রামবাসীদের গুন্ডা বলেছেন রেঞ্জার। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কিনা জানি না। আমি মনে করি ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।"
[আরও পড়ুন: ‘লাশের হিসাব কে দেবে? কোন কোটায় দাফন হবে?’, অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ নিয়ে মন কাঁদছে স্বস্তিকার]
উল্লেখ্য, পূর্ব মেদিনীপুরে সমুদ্রসৈকত তাজপুরে বনদপ্তরের জমিতে বেআইনিভাবে বহু হকার দীর্ঘদিন ধরে বসে রয়েছে। এই সমস্ত হকারদের জন্যই একদিকে যেমন পরিবেশ ও সৈকতভূমির ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই পর্যটকরা সমুদ্র উপকূলকে উপভোগ করতে পারছেন না। মাসখানেক আগে নবান্নে বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্যের সর্বত্র সরকারি জমিতে থাকা বেআইনি দখলদারদের সরিয়ে দিতে হবে। বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশকে মাথায় রেখে এদিন সমুদ্র উপকূলে বনদপ্তরের জমি থেকে হকারদের জবরদখল সরিয়ে নিতে বলেন কাঁথির রেঞ্জ অফিসার মনীষা শ। খবর পেয়ে জেলার বিধায়ক তথা মন্ত্রী অখিল গিরি হকারদের সমর্থনে পৌঁছে ওই মহিলা ফরেস্ট অফিসারের উদ্দেশে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সর্বত্র। এর পরই অখিল গিরিকে মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা বলে তৃণমূল। সেই অনুযায়ী সোমবার মন্ত্রিত্ব পদ থেকে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন বলেই দাবি অখিল গিরির।