shono
Advertisement

মাওবাদী তকমা উড়িয়ে ১৩ বছর পর বেকসুর খালাস নন্দীগ্রাম জমি রক্ষা আন্দোলনের চারণ কবি

বেকসুর খালাস করা হল আরও পাঁচজনকে।
Posted: 09:34 PM Feb 28, 2023Updated: 09:34 PM Feb 28, 2023

চঞ্চল প্রধান,হলদিয়া: মাওবাদী তকমা উড়িয়ে ১৩ বছর পর বেকসুর খালাস নন্দীগ্রাম জমি রক্ষা আন্দোলনের চারণ কবি মধুসূদন মণ্ডল ওরফে নারায়ণ। সেই সঙ্গে বেকসুর খালাস করা হল শচীন ঘোষাল(বাগনান), রাধেশ‍্যাম দাস(খেজুরি), সিদ্ধার্থ মণ্ডল (খেজুরি), সঞ্জয় মণ্ডল (ডায়মণ্ড হারবার), দেবলীনা চক্রবর্তীকে (কলকাতা)। মঙ্গলবার আলিপুর আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

২০০৭ সালে বাম জমানায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (স্পেশ্যাল ইকনোমিক জোন) গড়ার উদ্দেশ্যে নন্দীগ্রামের ২৭টি ও খেজুরির ২ মৌজা অধিগ্রহণের উদ‍্যোগ নেয়। নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি গড়ে নন্দীগ্রামের মানুষ লড়াই শুরু করেন। হলদিয়া থেকে ছুটে গিয়ে সেই জমি রক্ষা আন্দোলনে সহযোগীর ভূমিকা নিয়েছিলেন মধুসূদন মণ্ডল। গান লিখে এবং গ্রামের পথে গান গেয়ে চারণ কবি হিসেবে আন্দোলনকারীদের তিনি উদ্বুদ্ধ করতেন। সেই আন্দোলন পর্বে স্থানীয় সোনাচূড়া এলাকায় মাতঙ্গিনী মহিলা সমিতি গড়ে মহিলাদের সাহস দিতে উদ‍্যোগী হয় কলকাতার দেবলীনা চক্রবর্তী। এলাকায় মৎস্যজীবী সমিতি গড়ে আন্দোলন করতে মাঠে নেমেছিলেন খেজুরির রাধেশ‍্যাম দাস,সিদ্ধার্থ মণ্ডল।

[আরও পড়ুন: এবার লিভ-ইন সম্পর্কেও লাগবে রেজিস্ট্রেশন? সুপ্রিম কোর্টে দায়ের মামলা]

মধুসূদনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার অভিযোগ ছিল বাগনানের শচীন ঘোষাল, ডায়মন্ড হারবারের সঞ্জয় মণ্ডল এবং মধুসূদনের আত্মীয় রাজেশ মণ্ডল। সবাইকে মাওবাদী তকমা দিয়ে ২০১০ সালের ২৭ জুন তৎকালীন মুখ‍্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তারপর থেকে জেল হেফাজতে কাটিয়েছেন ধৃতরা। কিন্তু রাজেশ মাধ‍্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন। তাই তাঁকে ২০১১ সালে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকিদের জেল হেফাজত চলতে থাকে। ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর শর্তাধীন জামিন পান সিদ্ধার্থ বাদে বাকি ৫ জন। মামলার সম্পূর্ণ নিষ্পত্তির জেদ চেপে যায় সিদ্ধার্থের। তিনি থাকলেন জেলে। কিন্তু আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জামিনে মুক্ত পাঁচ ব‍্যাক্তিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল নিজের থানা এলাকার বাইরে একটিও রাত কাটানো যাবে না।

আদালতের নির্দেশ মেনেই কঠিন শৃঙ্খলায় তাঁরা নিজেদের বেঁধেছিলেন। উপযুক্ত তথ‍্য-প্রমানের অভাবে মঙ্গলবার সেই মামলার নিষ্পত্তি ঘোষণা করল আলিপুর আদালত। তবে মিথ‍্যা মামলার জন‍্য তৎকালিন বাম সরকারের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মধুসূদন। তিনি বলেন, “আমার জীবনে সেরা সময় নষ্ট করে দিয়েছে রাজ‍্যের বাম সরকার। সিপিএমের নেতারা আমার সব জীবন-যৌবন কেড়ে নিয়ে আজ আমাকে মাওবাদী তকমা দিয়ে সর্বনাশ করেছে। আর তা করতে গিয়ে ওরাও শেষ হয়েছে এরাজ‍্যে। মানুষ ওদের চালাকি ভুলবে না। তবে বিচার ব‍্যবস্থার প্রতি আস্থা ছিল। তাই ১৩ বছর পর বেকসুর খালাস হলাম।” তবে আর্থিকভাবে সমস্যায় জর্জরিত মধুসূদন জীবনের লড়াই ছাড়তে নারাজ। দুর্গাচক সিপিটি মার্কেটের কাছে রেল ক্রসিংয়ের ধারে চায়ের দোকান পেতে বসার পরিকল্পনা করেছেন। চায়ের দোকানের উপার্জনে পরিবার নিয়ে বাকি জীবনটা তিনি কাটাতে চান।

[আরও পড়ুন: সত্যি হচ্ছে আশঙ্কাই! একধাক্কায় প্রায় দু’শতাংশ কমল দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement