মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: রামসদয় কলেজের পড়ুয়াদের ডিজের তাণ্ডবে জেরবার আমতা শহর। যানজটেও নাকাল হতে হল স্থানীয় বাসিন্দাদের। জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার ছিল ওই কলেজের ছাত্র সংসদ আয়োজিত সরস্বতী পুজোর বিসর্জন। সেই বিসর্জনের মিছিলেই এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ, পড়ুয়াদের এই বিসর্জনের মিছিল যাওয়ার সময় আমতা-জয়পুর রোডের পাশে থাকা দোকানদাররা দীর্ঘক্ষণ কানে আঙুল চাপা দিয়ে বসে থাকতে বাধ্য হন। ব্যাপক সমস্যায় পড়েন পথচারীরা। শুধু তাই নয়, ডিজে মিউজিকের আওয়াজের জেরে মিছিলে যাওয়া পড়ুয়ারাদেরও একাংশকে কানে আঙুল চাপা দিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। কলেজের ছাত্রদের এই উচ্ছৃঙ্খল আচরণে রীতিমতো ক্ষুব্ধ পরিবেশকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে এই ঘটনাকে মিথ্যা রটনা বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই উদয়নারায়ণপুরে তৃণমূল ছাত্র যুবদের এক অনুষ্ঠানে উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা ছাত্রদের আরও শৃঙ্খলা পরায়ণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর একটা নাগাদ মিছিল করে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। হাজারেরও বেশি পড়ুয়া মিছিলে উপস্থিল ছিলেন। ছিল প্রায় পঞ্চাশটি ঢাক। আর ছিল ডিজে মিউজিক। কিন্তু এই ডিজের আওয়াজে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় আমতা শহরের বড় অংশ।
[আরও পড়ুন: স্ত্রীকেও ভাগ করে খেতে পারেন পাঁচ স্বামী! বিতর্কিত মন্তব্য মদনের, নিন্দা কুণালের]
গত পর্যটনের মরশুমে প্রশাসন বেশ সদর্থক ভূমিকা নিয়েছিল। নাকা চেকিং করে রাস্তায় ডিজে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু এখানে পুলিশ থাকলেও সেভাবে কোন উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। ছাত্রদের এই কাজ নিয়ে সরব হয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশকর্মী জয়িতা কুণ্ডু বলেন, “এটা গুরুতর অপরাধ। ছাত্রদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না হয় সেটার দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।” আরও এক পরিবেশ কর্মী অজয় দাসের কথায়, “সমাজে ছাত্রদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা এমনটা না করাটাই বাঞ্ছনীয় ছিল। পাশাপাশি অধ্যাপক এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে নজর দেওয়া উচিত ছিল। তবে যেটা হয়েছে সেটা অত্যন্ত লজ্জাজনক।”
কলেজের অধ্যক্ষ দেব কুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “CCTV-র ফুটেজে আমি দেখেছি কলেজে ঢাক বাজানো হয়েছিল। তবে বাইরে কী হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। নিশ্চয়ই খোঁজ নেব এবং যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে আগামী দিনে যাতে ঘটনা না হয় সেটা দেখব।” আমতা কলেজ তৃণমূল কংগ্রেস ইউনিটের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, “কোনওরকম ডিজে মিউজিক বাজানো হয়নি। এমনকী যানজটও হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটানো হচ্ছে।”