সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব বিরোধী আন্দোলনে (Anti-Hijab protests) অগ্নিগর্ভ ইরান (Iran)। যে করো হোক বিদ্রোহ দমনে মরিয়া সেদেশের প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে তেহরানের এক শীর্ষনেতা ও ধর্মগুরুর ভাইঝি ফরিদা মোরাদখানি, যিনি বরাবরই ইরানের মোল্লাতন্ত্রের কড়া সমালোচক, তাঁকে তিন বছরের সাজা দেওয়া হল।
গত নভেম্বরেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, হিজাব বিরোধী আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে তিনি তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বহির্বিশ্বকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। অবশেষে তাঁকে সাজা দেওয়া হল। ফরিদার আইনজীবী মহম্মদ হোসেন আঘাসি জানিয়েছেন, প্রথমে তাঁর মক্কেলকে ১৫ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একটি আবেদন জমা পড়ার পরে বিচারক সিদ্ধান্ত বদলে ওই সাজা ৩ বছরের করা হয়। জানা গিয়েছে, তাঁর কাকাকে মুসোলিনি ও হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। কড়া সমালোচনা করেছিলেন সেদেশের সরকারের। এরপর থেকেই মাথাচাড়া দেয় বিতর্ক। গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। অবশেষে দেওয়া হল সাজা।
[আরও পড়ুন: চেনাতে হবে ‘ব্যাড টাচ’ ‘গুড টাচ’, শিশুদের যৌন হেনস্তা নিয়ে বার্তা দেশের প্রধান বিচারপতির]
প্রসঙ্গত, হিজাব বিরোধী আন্দোলন থামিয়ে দিতে একাধিক কড়া পদক্ষেপ করেছে ইরানের প্রশাসন। বিদ্রোহ দমনে অমানুষিক অত্যাচার চালাচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশো মানুষ। পড়ুয়াদের বিষ খাইয়ে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগও উঠেছে ইরানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরানের আদালত। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক আধা সেনাকর্মীকে খুনের। মামলায় মোট ১৩ জন পুরুষ ও তিন নাবালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। সকলকেই সাজা দেওয়া হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরেই ইরান উত্তাল আন্দোলনে। ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের মারে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদী মিছিল। স্বৈরশাসকের বিরোধিতায় ইটালির বুকে তৈরি হওয়া ‘বেলা চাও’ গানটি গেয়ে ইরানের রাস্তায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন আরব দুনিয়ার মেয়েরা। হিজাব বিরোধী সেই আন্দোলনে শামিল পুরুষদের একাংশও। তাঁদের কণ্ঠেও ‘বেলা চাও’। প্রতিবাদকে রুখতে ব্যর্থ ইরানের প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে ফরিদা মোরাদখানিকে তিন বছরের সাজা দিল সেদেশের আদালত।