shono
Advertisement

পাখি শিকার করতে আউশগ্রাম জঙ্গলে সশস্ত্র শিকারিরা, পরিকল্পনা বানচাল করল বনদপ্তর

শিকারিদের সঙ্গে ছিল প্রচুর কুকুর।
Posted: 05:34 PM Jan 19, 2021Updated: 06:14 PM Jan 19, 2021

ধীমান রায়, কাটোয়া: কুয়াশায় মোড়া শীতের সকাল। কয়েকশো সশস্ত্র মানুষ এগিয়ে চলেছে অজয় নদের চর ধরে। কারও হাতে তীরধনুক। কারও হাতে বর্শা। তাঁদের সামনের সারিতেই একদল শিকারি কুকুর। জঙ্গলের ভিতরে জবুথবু হয়ে বসে পাখির দল। গাছের নিচে দু-একটা ময়ূর-ময়ূরী। সশস্ত্র বাহিনীর কোলাহল কানে পৌঁছতেই ভয়ে কাঁটা হয়ে যায় পাখিরা। ছোটাছুটি শুরু করে। যদিও অবশেষে প্রাণে রক্ষা পায় তারা।

Advertisement

মঙ্গলবার এই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম জঙ্গলমহল। আদিবাসী সম্প্রদায়ের কয়েকশো লোকজন অস্ত্রশস্ত্র-সহ শিকারি কুকুরের দলকে সঙ্গে নিয়ে আউশগ্রাম জঙ্গলে ঢুকে পড়ে শিকারের উদ্দেশে। শেষ মুহূর্তে ওই শিকারি বাহিনীকে রুখতে সক্ষম হল বনদপ্তর। বন্যপ্রাণী ও পক্ষীকূলের কার্যত ত্রাতা হয়ে দাড়ালেন আউশগ্রামের আদুরিরার বিট অফিসার আসরাফুল ইসলাম। এদিন তাঁর সক্রিয়তায় শিকারের উদ্দেশে আসা আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা জঙ্গল ছেড়ে পালিয়ে যায়। অভিযোগ, বীরভূম জেলা থেকে অজয় নদ পেরিয়ে আউশগ্রাম জঙ্গলমহলে হানা দিয়েছিল প্রায় শ’চারেক সশস্ত্র আদিবাসী লোকজন। বনদপ্তর ও স্থানীয়দের তৎপরতায় তারা একটি পশুপাখিকেও মারতে সক্ষম হয়নি।

[আরও পড়ুন: উষ্ণায়নের অভিশাপ থেকে হিমবাহকে রক্ষা করতে বিশেষ ‘কম্বল’! চমকপ্রদ পদক্ষেপ চিনের]

জানা যায়, প্রতি বছর মাঘ মাসের প্রথম তিন মঙ্গলবার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ শিকারে বের হয়। সেই অনুযায়ী এদিন ছিল প্রথম মঙ্গলবার। সেই কারণে এদিন কাকভোরে আউশগ্রামের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কাছে দেখা যায় অজয় নদের চর দিয়ে বীরভূম জেলা এলাকার কয়েকশো আদিবাসী সারি দিয়ে এগিয়ে আসছে। তাদের সঙ্গে প্রায় ২৫ টি শিকারি কুকুর। ততক্ষণে ভূয়েরা বটতলার কাছে আউশগ্রাম এলাকার শতাধিক আদিবাসীও শিকারের উদ্দেশে জড়ো হয়ে গিয়েছে। মুহুর্তের মধ্যে খবর পৌছে যায় আদুরিরার বিট অফিসার আসরাফুল ইসলামের কাছে। তিনি তার সহকর্মীদের নিয়ে পুলিশ ছাড়াই বীরভূমের ওই শিকারিদলের সামনাসামনি দাঁড়িয়ে পড়েন। আসরাফুল ইসলামের কথায়, “আউশগ্রাম জঙ্গলে ইদানিং ময়ূরের সংখ্যা বেড়েছে। ময়ূরের বাচ্চারা মাঝেমধ্যেই আশপাশের গ্রামে ঢুকে পড়ে। এছাড়া প্যাঙ্গোলিন, সজারু, বনবিড়াল তো রয়েছেই। শিকারিরা একবার জঙ্গলে ঢুকে পড়লে প্রথমেই তারা ময়ূরগুলোকে টার্গেট করবে। নিঃশেষ হয়ে যাবে এইসব বন্য পশুপাখি। অনেক কষ্টে শিকার আটকে দিই।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে আসরাফুল ইসলাম এদিন শিকারি দলের সামনে গিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। বনরক্ষা কমিটির সদস্যদেরও ডাকেন বন আধিকারিক। আসরাফুল ইসলাম সাফ জানিয়ে দেন এরপরও যদি বেআইনিভাবে কেউ বন্যপশু পাখি শিকার করার চেষ্টা করেন তাহলে চরম পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অবশেষে বীরভূম ফিরে যায় শিকারির দল।

[আরও পড়ুন: বৃহস্পতির উপগ্রহ থেকে ভেসে এল ‘পৃথিবীর মতো’ এফএম তরঙ্গ! শুরু নয়া জল্পনা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement