সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীর সীমান্তে যে কোনও সময় পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে সতর্ক করলেন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, ‘‘কাশ্মীর সীমান্তে উত্তাপ বাড়ছে। সংঘর্ষ, পাক সেনার কমান্ডোদের চোরাগোপ্তা আক্রমণ, অনুপ্রবেশের চেষ্টা বাড়ছে। নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় যে কোনও মুহূর্তে অবস্থার সাংঘাতিক অবনতি হতে পারে। তবে তার জবাব দিতে পুরোপুরি তৈরি রয়েছে ভারতীয় সেনা।’’ গত ক’দিন ধরেই ভারত-পাক সীমান্তের কাছে কাশ্মীরের রাজৌরি, সুন্দরবনি ও পুঞ্চ সেক্টরে গুলি বিনিময় চলছে।
সোমবার গুরেজ সেক্টরে হামলা চালায় পাকিস্তান। পাক হামলার জবাবে মঙ্গলবার পাল্টা আঘাত হানে ভারত। মঙ্গলবার কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরে ভারতীয় সেনা আউটপোস্টগুলিতে হামলা চালায় পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এদিন সুন্দরবনি সেক্টরে নাথুয়া কা টিব্বা পোস্টেও হামলা চালায় পাক বাহিনী।
মঙ্গলবারই কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনাদের গুলিতে নিহত হল দুই পাক কমান্ডো। পাক সেনার বর্ডার অ্যাকশন টিম (ব্যাট)-এর সদস্য ছিল এই দুই কমান্ডো। এরা মূলত পাকিস্তানের এলিট বাহিনী স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ (এসএসজি)-র সক্রিয় সদস্য এবং সেখানেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। পুঞ্চ সেক্টর দিয়ে কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করে হামলা চালানোর নির্দেশ পেলে এসএসজি থেকে মাঝে মাঝেই ‘ব্যাট’ গ্রুপে নিয়োগ করা হয় এই কমান্ডোদের। সোমবার সন্ধেয় ব্যাট-এর একটি দল অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে ভারতীয় সেনাদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। এই গুলিযুদ্ধে রাইফেলম্যান সুখবিন্দর সিং নামে ২১ বছরের এক ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন।
[আরও পড়ুন: মাঝ সমুদ্রে আছড়ে পড়ল ব্রহ্মস মিসাইল, নয়া নজির বায়ুসেনার]
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলা এই গুলিযুদ্ধে দুই পক্ষই রকেট লঞ্চার, অ্যান্টি ট্যাংক গাইডেড মিসাইল, যথেচ্ছ গ্রেনেড ব্যবহার করে। দুই কমান্ডোর দেহ নিয়ে ব্যাটের বাকিরা জওয়ানরা দ্রুত গা ঢাকা দেয়। সোমবার দিনের বেলায় সুন্দরবনি, নাথুয়া কা টিব্বা সেক্টরে দুই সেনাবাহিনীর মধে্য তীব্র গুলিযুদ্ধ চলে। তারপর রাতে পুঞ্চ দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা হয়। পাক সেনাদের রেডিও বার্তায় আড়ি পেতে স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে যে তাদের দুই কমান্ডো খতম হয়েছে। সেনাবাহিনীর নর্দার্ন কমান্ড জানিয়েছে, পাক সেনা ও জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিতে প্রচণ্ড সজাগ রয়েছেন জওয়ানরা। এই পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধানের বক্তব্য বুঝিয়ে দিল পরিস্থিতি সত্যিই কতটা উদ্বেগজনক।
গত অগস্ট মাসে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের ‘স্পেশাল স্টেটাস’ তুলে দেওয়ার পর থেকেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। সেই থেকে সীমান্তরেখা বরাবর গোলাগুলি বর্ষণের ঘটনাও বেড়ে গিয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি সংসদে জানিয়েছিলেন, অাগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে ‘‘নিয়ন্ত্রণরেখায় ৯৫০টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।” আগামী ৩১ ডিসেম্বর সেনাপ্রধান হিসেবে অবসর নিতে চলেছেন জেনারেল বিপিন রাওয়াত। তাঁর জায়গায় নয়া সেনাপ্রধান হচ্ছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে।
The post যে কোনও মুহূর্তে বাঁধতে পারে যুদ্ধ! সেনাপ্রধান রাওয়াতের বার্তায় বাড়ছে উদ্বেগ appeared first on Sangbad Pratidin.