সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের সঙ্গে সংঘাতের জড়ানোর ফল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে মালদ্বীপ। রেকর্ড হারে ভারতীয় পর্যটক কমে গিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে। দেশটির অনুদানেও বড়সড় কাটছাঁট করেছে কেন্দ্র। ফলে আর্থিক সংকটে ধুঁকছে মালদ্বীপ। তার উপর মাথায় রয়েছে বড় অঙ্কের ঋণের বোঝা। আর এই পরিস্থিতিতে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে আসরে নেমে পড়েছে চিন। মালেকে আর্থিক সাহায্য করবে বেজিং। যা নিয়ে মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে দুদেশের মধ্যে।
'চিনপন্থী' প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পরই ফাটল ধরে ভারত-মালদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। তার পর নানা কারণে সংঘাত আরও তীব্র হয়। জোর ধাক্কা খায় সেদেশের অর্থনীতি। যার ফলে জনগণের ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে সরকারের প্রতি। অবস্থা বেগতিক বুঝে মুইজ্জু এখন অনেকটাই ভারতবিরোধী নীতি থেকে সরে এসেছেন। কিন্তু তাতেও চাঙ্গা হয়নি অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য চিনের পিপলস ব্যাঙ্ক অফ চিনের সঙ্গে চুক্তি করেছে মালদ্বীপের আর্থিক উন্নয়ন মন্ত্রক। এই চুক্তির মাধ্যমে লগ্নি ও লেনদেনের পথ প্রসস্ত হবে বলেই জানা গিয়েছে।
এনিয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং সংবাদমাধ্যমে জানান, "চিন বরাবরের মতো এবারেও সামর্থ্যের মধ্যে মালদ্বীপের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করবে।" তবে ঠিক কীভাবে মালদ্বীপকে সাহায্য করা হবে তা নিয়ে বেশি কিছু জানায়নি কমিউনিস্ট দেশটি। এর আগে গত মার্চ মাসে বিনামূল্যে মালেকে সামরিক সাহায্য করার জন্য চুক্তি করেছিল বেজিং। মালদ্বীপকে ১২টি ইকো ফ্রেন্ডলি অ্যাম্বুল্যান্সও উপহার দিয়েছিল চিন। বিশ্লেষকদের মতে, চিন মুখে যতই বলুক সহযোগিতা, এই পদক্ষেপ আসলে দুর্বল দেশগুলোকে 'ঋণের ফাঁদে' ফেলার ছক! অর্থ দিয়ে ঋণের জালে জড়িয়ে মালদ্বীপের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চায় তারা। যাতে ভারতকে চাপে ফেলা যায়। বেজিংয়ের এই ঋণের ফাঁদে পড়ে যেভাবে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রকে নাজেহাল হতে হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের অজানা নয়।
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় এসেই দেশ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিলেন মুইজ্জু। তার পর থেকে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় মালদ্বীপ। তার মাঝে আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করে তাঁর সরকারের তিন মন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য। সেই ‘চিনপন্থী’ প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুই উপস্থিত ছিলেনমোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। তিনি বৈঠকও করেছেন নমোর সঙ্গে। এমনকী এক অনুষ্ঠানে ভারতকে তাদের ‘ঘনিষ্ঠতম’ সঙ্গী বলে উল্লেখ করেছিলেন মুইজ্জু।