সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৩৭ সালে মুসলিম লিগের আমলে যে নিয়ম লাগু হয়েছিল অসম বিধানসভায়, ২০২৪ সালে সেই নিয়মে দাঁড়ি টানল হিমন্ত সরকার। জুম্মার নমাজের জন্য ২ ঘণ্টার বিরতির নিয়ম বাতিল করল অসম বিধানসভা। এ প্রসঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে হিমন্ত বিশ্বশর্মা লেখেন, 'অতীতের ঔপনিবেশিক সংস্কৃতি থেকে অবশেষে মুক্তি পেল অসম বিধানসভা।'
সেই ব্রিটিশ আমলে ১৯৩৭ সালে অসম বিধানসভায় মুসলিম লিগের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, রাজ্যের মুসলিম বিধায়কদের জন্য শুক্রবার অর্থাৎ জুম্মার দিন ১২টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত নমাজ বিরতি দেওয়া হবে। তখন থেকেই চলে আসছিল এই নিয়ম। তবে সময় বদলেছে। রাজ্য থেকে প্রাচীন এই নিয়ম তুলে দিলে তৎপর হন বিজেপি শাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সেই মতো ৭ সদস্যের কমিটি গড়ে খতিয়ে দেখা হয় এই নিয়মের কোনও প্রয়োজন রয়েছে কিনা। দু'দিন আগে কমিটি জানায় নিয়মের কোনও প্রয়োজন নেই। এর পর শুক্রবার বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে অবলুপ্ত করা হয় এই নিয়ম। জানানো হয়, লোকসভা ও রাজ্যসভা কোনও জায়গাতেই এমন নিয়ম নেই তাই অসমেও এই নিয়ম গুরুত্বহীন।
[আরও পড়ুন: মারাঠা অস্মিতায় আঘাত, মূর্তি ভাঙায় শিবাজির পায়ে মাথা ঠেকিয়ে ক্ষমাপ্রার্থী মোদি]
নিয়ম প্রত্যাহারের পর শুক্রবার এক্স হ্যান্ডেলে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা লেখেন, 'জুম্মার নামাজের জন্য ২ ঘণ্টার বিরতির নিয়ম তুলে নেওয়া হয়েছে অসম বিধানসভা থেকে। ১৯৩৭ সালে মুসলিম লিগের নেতা সৈয়দ সাদুলা এই নিয়ম চালু করেন। সেই ঔপনিবেশিকতার আরও একটি চিহ্ন ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হল। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের জন্য মাননীয় স্পিকার বিশ্বজিৎ দাইমারের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। দেশের কোনও রাজ্যে এমন নিয়ম ছিল না। আজ এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বিধানসভার ১১ নম্বর নির্দেশাবলী পরিবর্তন করা হল। এই সিদ্ধান্তে কেউ আপত্তি জানাননি।'
[আরও পড়ুন: ‘৪৭ শতাংশ বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন’, প্রতিবন্ধকতাকে ‘অস্ত্র’ করে চাকরি ফেরাতে মরিয়া পূজা]
উল্লেখ্য, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর সকলের জন্য একই আইন অর্থাৎ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করতে তৎপর হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তবে সেই বিধি এখনও কার্যকর না হলেও আইনে বদল এনে একাধিক পদক্ষেপ নিতে দেখা গিয়েছে অসমে। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বাল্য বিবাহ রোখার পাশাপাশি বাল্যবিবাহ রুখতে মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রশন বাধ্যতামূলক করতে তৎপর হয় তিনি। যার ফলে কোনও কাজি নয়, রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টে। আগামী দিনে উত্তরপ্রদেশের ধাঁচে অসমেও লাভ জেহাদ রুখতে কড়া আইন আনা হবে বলে জানিয়েছেন হিমন্ত। তাতে লাভ জেহাদে দোষী প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাবাসের আইন থাকবে। এখানেই শেষ নয়, আগামী দিনে ভিনধর্মে জমি বিক্রি বা দান করা রুখতেও নতুন আইন আনা হবে জানানো হয়েছে। হিমন্ত বিশ্ব শর্মার একের পর এক এই পদক্ষেপ আসলে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলি।