সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারত ও বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন দিশার সূচনা করে নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা দিল ঢাকার প্রতিনিধি দল। আজ শুক্রবার দিল্লিতে বৈঠকে বসবেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা।
[আরও পড়ুন: একের পর এক বিয়ে, স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ফাঁসের হুমকি, পুলিশের জালে যুবক]
জানা গিয়েছে, বৈঠকে যোগ দিতে ভারত যাচ্ছেন বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব (সিনিয়র) তপনকান্তি ঘোষ। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রকের একটি প্রতিনিধিদল আগেই ঢাকা ছেড়েছিলেন। বৈঠকে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেবেন সচিব বি ভি আর সুব্রহ্মণ্যম আর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপনকান্তি ঘোষ। সফরে রওনা দেওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমকে তপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, এবারের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিশেষ করে শুল্ক বাধা দূর করার ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শুল্ক বাধা দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে।
বলে রাখা ভাল, ২০২০ সালে ভারত নতুন কাস্টমস নীতি জারি করে। যার আওতায় দেশটির কাস্টমস আধিকারিকরা রপ্তানি পণ্যের রুলস অব অরিজিন, পণ্যের ভ্যালু এডিশন-সহ রপ্তানিকারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের নথিপত্র তলব করতে পারেন। ভারতের এই নীতিকে ‘সাফটা’ চুক্তিবিরোধী উল্লেখ করে গতবছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ওই নীতি কার্যকর না করতে অনুরোধ করেছিল ঢাকা। তখন বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সাফটার রুলস অব অরিজিন মেনে চলতে প্রতিবেশী দেশটিকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু এটি কার্যকর হওয়ায় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টি করে। এটি দূর করা-সহ পাটপণ্য রপ্তানির ওপর বিদ্যমান অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের ওপর গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ।
এছাড়া এদিনের বৈঠকে গুরুত্ব পাবে ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা রেলওয়ে কনটেনারে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির বিষয়টি। করোনার সময় ভারত থেকে ট্রেনের কনটেনারে বাংলাদেশি পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি শুরু হয়েছে। ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে আনলোড করার পর কনটেনারগুলো ভারতে খালি ফেরত যায়। সেগুলোতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। তবে এজন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হয়। বাংলাদেশ যাতে খালি কনটেনারে ভারতে পণ্য রপ্তানি করতে পারে, সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া ভারতের উপর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির বিষয় নিয়েও কথা হবে।
সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আগে নয়াদিল্লিতে দুই দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা গতকাল শেষ হয়েছে। সেখানেই সচিব পর্যায়ের সভায় দুই পক্ষের এজেন্ডা চূড়ান্ত করা হয়েছে।এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে বাংলাদেশ সাউথ এশিয়ান ফ্রি ট্রেড এরিয়া (সাফটা) চুক্তির আওতায় ভারতের কাছে ২৫টি পণ্য বাদে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুবিধা পেয়ে থাকে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও যাতে এ সুবিধা অব্যাহত থাকে সেটি প্রাধান্য পাবে আলোচনায়। তবে ভারতের পক্ষ থেকে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরের এজেন্ডা রাখা হচ্ছে। কিন্তু এটি একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক চুক্তি, যাতে উভয়পক্ষই লাভবান হবে।