সুকুমার সরকার, ঢাকা: আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে ফের রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরব হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সবসময় মানবাধিকার রক্ষা করে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের বোঝা আর বহন করা সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে ভয়েস অফ আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনার (Sheikh Hasina) একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সেখেনে তিনি বলেন, “সবাইকে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে হবে। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের অবশ্যই দেশে ফিরে যেতে হবে। এত বিশাল জনসংখ্যার (সাড়ে ১১ লক্ষ প্রায়) দায়িত্ব একা একটি দেশের পক্ষে নেওয়া অসম্ভব। শুধু আশ্রয় দেওয়াই নয়, এত বিশাল জনসংখ্যার জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করাও একটি বড় দায়িত্ব যা কোনও দেশ একা বহন করতে পারে না।”
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে চিন, ভারতের প্রভাব খর্ব করার চেষ্টা!]
মায়ানমার (Myanmar) থেকে আর কোনও শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই উল্লেখ করে হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান কক্সবাজারের বন ধ্বংস করেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্টের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগের কারণ হচ্ছে এবং এলাকার চাষের জমি ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। অনেক রোহিঙ্গা মানব পাচারের পাশাপাশি মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েছে এবং ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে।”
বর্তমানে আমেরিকা সফরে রয়েছেন হাসিনা। সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেওয়া-সহ নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি। সেখানেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরব হন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, মায়ানমারের ফের সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলি থেকেও প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। একাধিক গোলা বাংলাদেশের জমিতেও আছড়ে পড়েছে। ঢাকা এনিয়ে কমপক্ষে চারবার প্রতিবাদও জানিয়েছে মায়ানমারের কাছে। এই লড়াইয়ের জেরে আবারও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা।