সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সফর ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে বাংলাদেশ। ওই সময় সংঘর্ষে প্রাণ হারান অন্তত ১৮ জন। তারপর থেকেই অভিযুক্তদের ধরপাকড় শুরু হয়। তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গেই উঠে এসেছে একর পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এবার জানা গিয়েছে, ধর্মের নামে রীতিমতো যৌনতার ব্যবসা শুরু করেছিল হিংসার নেপথ্যে থাকা হেফাজতে ইসলামের প্রধান মামুনুল হক।
[আরও পড়ুন: কেরলে গণধর্ষণের শিকার বাংলাদেশি তরুণী, ভাইরাল ভিডিও ঘিরে তোলপাড়]
কয়েকদিন আগেই রাজধানী ঢাকার অদূরে সোনার গাঁওয়ে একটি হোটেলে এক তরুণীর সঙ্গে আপত্তিজনক অবস্থায় আটক করা হয়েছিল মামুনুলকে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ জানিয়েছেন, মামুনুল ও তার দোসর হেফাজত নেতা বাবুনগরী দেশে-বিদেশে অবৈধ সম্পত্তির পাহাড় গড়ে তুলেছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তিনি বলেন, “ধর্মের নামে মানুষের অনুভূতিকে ব্যবহার করে নিজেদের আখের গোছানোতে লিপ্ত হয়েছেন কয়েকজন ধর্মগুরু। আপনারা দেখেছেন বাবুনগরী-মামুনুল হকের অবৈধ সম্পত্তির ফিরিস্তি বেরিয়ে এসেছে। কোন দেশে ক’টা দোকান আছে, লরি আছে, এগুলো বেরিয়ে এসেছে। বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি আয়োজিত ‘ধর্মের নামে অরাজকতা, তথাকথিত ধর্মীয় নেতাদের ধর্মহীনতা এবং শান্তির ধর্ম ইসলাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মাহমুদ আরও বলেন, “ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে ও মাদ্রাসা দেখিয়ে বিভিন্ন দেশ এবং দেশের বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে থেকে তারা চাঁদা সংগ্রহ করে। আর সেই টাকা দিয়ে পরস্ত্রীকে নিয়ে রিসর্টে যায় ফুর্তি করার জন্য। এমনকী জাকাত-ফিতরার টাকাও তারা আরাম-আয়েশের জন্য নিজেদের অ্যাকাউন্টে নিয়ে গিয়েছে। এরা আলেম নামধারী কলঙ্ক।”
উল্লেখ্য, মামুনুল হককে গত ১৮ এপ্রিল ঢাকার মহম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ১৮টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি মামুনুলের লুকানো ফোনটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। মহম্মদপুরের মাদ্রাসার একটি কক্ষ থেকে সেটি উদ্ধারের পর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তার মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাট লিস্ট থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সূত্র থেকে তার কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা আসার তথ্য মিলেছে। বাবরি মসজিদ, কওমি মাদরাসার ছাত্রদের শিক্ষা ও হেফাজতে ইসলামের নাম করে মামুনুল মধ্যপ্রাচ্য থেকে কোটি কোটি টাকা এনেছে। সেসব টাকা বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজে ব্যয় করা হচ্ছে। ঢাকায় ‘বাবরি মসজিদ’ নির্মাণ করেছে মামুনুল। এই মসজিদের নামে কাতার, দুবাই ও পাকিস্তান থেকে টাকা আনার প্রমাণও মিলেছে।