সুকুমার সরকার, ঢাকা: শ্রীলঙ্কার পর এবার বাংলাদেশ (Bangladesh)। ভারতের প্রতিবেশী আরও এক দেশে একধাক্কায় বিপুল হারে বাড়ল জ্বালানির দাম। পেট্রল (Petrol), ডিজেল (Diesel) এবং অকটেনের অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধির জেরে বিপাকে আমজনতা। গত নভেম্বরে জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জেরে বাস, স্টিমারের ভাড়া অস্বাভাবিকহারে বাড়ানো হয়েছিল। এবারও তেমন কিছু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জনতা। ইতিমধ্যে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে জেলায়-জেলায় বিক্ষোভ চলছে। বাংলাদেশে জ্বালানির দামবৃদ্ধির সঙ্গে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে মিল পাচ্ছে বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে জ্বালানির নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। ডিজেল এবং কেরোসিনের দাম একধাক্কায় ৩৪ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির পর সেঞ্চুরি পার করেছে দুই জ্বালানির দামই। ডিজেল ও কেরোসিনের লিটার প্রতি দাম ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১১৪ টাকা দাঁড়িয়েছে। বেড়েছে পেট্রলের দামও। ৮৬ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩০ টাকা। সেঞ্চুরি পার করে অকটেনের দাম দাঁড়িয়েছে ১৩৫ টাকা। জনতার অভিযোগ, গত নভেম্বরে ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর বাস ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ, লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো হয় ৩৫ শতাংশ যা তেলের দাম বাড়ানো হারের চেয়ে অনেক বেশি।
[আরও পড়ুন: ঘরোয়া ভিতু মেয়ে থেকে মারকুটে অবতার, আসছে নতুন ধারাবাহিক ‘জগদ্ধাত্রী’]
দামবৃদ্ধির খবর সামনে আসতেই পেট্রল পাম্পগুলির সামনে লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছিল। তবে অনেক পেট্রল পাম্পই জ্বালানি বিক্রি বন্ধ করে দেয় রাতেই। ফলে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। জ্বালানির দাম কমানোর দাবিতে সরব হয়েছে বাংলাদেশের যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বিবৃতি জারি করে তাদের দাবি, “বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালেও বর্তমানে তেলের বাজার নিম্নমুখী। এই সময়ে বাজার পর্যবেক্ষণ না করে, কেবল আইএমএফের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। অনতিবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে, পূর্বের মূল্য বহাল রাখা হোক।”
বাংলাদেশের এই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিকে অশনি সংকেত হিসেবে গণ্য করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের শুরুতে অস্বাভাবিক হারে দাম বেড়েছিল জ্বালানি। এরপরই নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম লাগামছাড়াভাবে বেড়েছিল। বাংলাদেশেও কি সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে, উঠছে প্রশ্ন।