সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের চাপের মুখে অবশেষে হিন্দু নির্যাতনের কথা স্বীকার করল ইউনুস প্রশাসন। বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরির ঢাকা সফরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে জানানো হল, সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সোমবার ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি। এই সফরে ইউনুস প্রশাসনকে তিনি স্পষ্ট বার্তা দেন, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার কোনওভাবে বরদাস্ত করা হবে না। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা রুখতে সদর্থক পদক্ষেপ নিচ্ছে তার প্রমাণ দিতে হবে। বিদেশ সচিবের সফরের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউনুস প্রশাসনের প্রেস মহম্মদ শফিকুল আলম সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, গত ৫ আগস্ট থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের উপর হিংসার ঘটনায় ৮৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭০ জনকে। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে হিংসা সংক্রান্ত সব তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
শফিকুল জানান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, ৬২টি মামলা হয়েছে এবং তাতে ৩৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। পাশাপাশি, পূজামণ্ডপ ও উপাসনালয়গুলিতে হিংসায় পুলিশের সরাসরি রিপোর্ট অনুযায়ী ২৬টি মামলা হয়েছে, যাতে ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারের রিপোর্টেই স্পষ্ট যে, হাসিনা সরকারের পতনের পর বেলাগাম হিংসা হয়েছে সংখ্যালঘুদের উপর। এবং যা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা হিমশৈলের চূড়া বলেই মনে করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ''বাংলাদেশ তো মানছিল না যে অত্যাচার হয়েছে। অবশেষে তা মানল, এটা ভালো। কিন্তু যতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে বাস্তবে সংখ্যাটা তার চেয়ে অনেক কম।"
অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত ইতিহাস মুছে মৌলবাদকে প্রাধান্য দিতে উঠে পড়ে লেগেছে ইউনুসের প্রশাসন। মুজিবের 'জয় বাংলা' স্লোগান নিষিদ্ধ করার পর এবার ১৬ ডিসেম্বরের নিরাপত্তা বাহিনীর কুচকাওয়াজে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের এই দিনেই ভারতীয় সেনা ও মুক্তি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি বাহিনী। প্রতি বছর এই দিনটিকে বিশেষভাবে পালন করে বাংলাদেশ। এবার তাতে নিষেধাজ্ঞায় ইউনুস প্রশাসনের যুক্তি সেনা এখন নিরাপত্তার কাজে ব্যস্ত। যদিও এই সিদ্ধান্তের পিছনে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পাকিস্তানের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা দিতেই এই সিদ্ধান্ত।