সুকুমার সরকার, ঢাকা: ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুথানের গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত হয় শেখ হাসিনার সরকারের। তার পর থেকেই দাবি উঠছিল নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের পদত্যাগের। আজ, ৫ সেপ্টেম্বর আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের একমাস পূর্তির দিনেই পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সকল সদস্য। ইস্তফা দেওয়ার আগে নব গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত ভোট করার দাবি জানান সকলে।
গত বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দাবি মেনে গত ৮ আগস্ট ড. মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শপথ নেন। এই নয়া সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। প্রধান বিচারপতি থেকে শুরু করে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনেকে ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। দাবি উঠছিল নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের ইস্তফা দেওয়ার। অবশেষে আজ বেলা ১২টার দিকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। জানিয়েদেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি-সহ তাঁর কমিশনের সদস্যরা পদত্যাগ করার মনস্থির করেছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়ার জন্য পদত্যাগপত্রগুলো ইসি সচিবালয়ের সচিবের কাছে তাঁরা জমা দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: হাসিনা সরকারের পতনের ১ মাস পূর্তিতে ‘শহীদি মার্চ’, কর্মসূচি ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের]
এছাড়া হাবিবুল আউয়াল পরামর্শ দেন, এই নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে হবে বিরতি দিয়ে। দেশের প্রতিটি নির্বাচনের ইতিহাস তুলে ধরেন তিনি বলেন, দেশের প্রথম সাংবিধানিক সাধারণ নির্বাচন ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক ছিল। ১৯৭৯ ও ১৯৮৭ সালের সাধারণ নির্বাচন সামরিক শাসনকালে হয়েছে। সেই ফলাফল নিয়েও বিতর্ক ছিল। ১৯৯১ সালের ভোট গ্রহণ রাজনৈতিক রূপরেখার ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন হয়েছিল। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন সংবিধানমতে দলীয় সরকারের অধীন হয়েছে।
এদিন সদ্য প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল করে দেওয়ার মতো কোনও সাংবিধানিক ভিত্তি ছিল না। সে কারণে অনেকেই কমিশনকে দোষারোপ করছে। এদিন দুপুরে রাজধানী ঢাকার আগার গাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় অনুষ্ঠানের সময় নির্বাচন ভবনের বাইরে একদল লোক বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন। সেসময় পাহারায় ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এবার কাদের নিয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গঠন হয় সেদিকেই নজর সকলের।