সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের খবর শোনা যাচ্ছে, ধর্মীয় নেতাদের বৈঠকে একপ্রকার মেনে নিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, উসকানির কারণে বারবার আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। আর সেই উসকানি ব্যক্তিগত স্তরের নয়, রাষ্ট্রীয় স্তরের।
চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারির পর প্রায় দুসপ্তাহ অতিক্রান্ত! উত্তরোত্তর অশান্তি বাড়ছে বাংলাদেশে (Bangladesh Unrest)। বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপও। নয়াদিল্লি, ব্রিটেন, আমেরিকা একযোগে সরব সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে। সব মিলিয়ে চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারি এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে প্রবল চাপে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। এই পরিস্থিতিতে দেশে আদৌ সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে কিনা, বা চিন্ময় প্রভুকে কোনওভাবে মুক্তি দেওয়া উচিত কিনা, সেসব নিয়ে আলোচনার জন্য ধর্মীয় নেতাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন ইউনুস। শুক্রবারের সেই বৈঠকে সব ধর্মের প্রতিনিধিদের সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা দাবি করেন, তিনি ভয়মুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন। এমন বাংলাদেশ যেখানে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয় থাকবে না।
বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বৈঠকেই ঘুরপথে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের কথা মেনে নিয়েছেন ইউনুস। তবে একই সঙ্গে এই নির্যাতনের 'প্রকৃত তথ্য'ও জানতে চান তিনি। দাবি করেন, বাংলাদেশে অশান্তির নেপথ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় উসকানি। সর্বধর্মের নেতাদের সামনে ইউনুস বলেন, "শুনলাম এখনও সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে। বাংলাদেশে নাগরিক হিসাবে সকল ধর্ম এবং জাতের সংবিধানস্বীকৃত অধিকার রয়েছে। সংখ্যালঘুরা যাতে দেশে নিরাপদে থাকেন, সেটা নিশ্চিত করা আমাদেরই কর্তব্য।" সংখ্যালঘুদের উপর কোনও হামলা হলে তার সঠিক তথ্য চান ইউনুস। এই সঠিক তথ্য সংগ্রহের কাজে ধর্মীয় নেতাদেরও সহযোগিতা চান তিনি।
ইউনুসের দাবি, "বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। কিন্তু এমন কোনও ঘটনা যা জনগণকে ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে, সেটা প্রশমিত করা উচিত।" আওয়ামি লিগ প্রধান হাসিনাকে নিশানা করে বাংলাদেশ সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা বলেন, "দেশের জনগণ একটি রাজনৈতিক শক্তিকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে; কিন্তু তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে নেই; বরং তারা দেশ-বিদেশে উসকানি দিচ্ছে।" এখানেই শেষ নয়, এর পর ঘুরিয়ে ভারতকে নিশানা করেন তিনি। অভিযোগ করেন, "উসকানির কারণে বাংলাদেশ বারবার আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে-ব্যক্তিগতভাবে নয়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে।"