সুকুমার সরকার, ঢাকা: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ-ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে সাইক্লোনটি। 'ডানা' শক্তিশালী ঝাপটার প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে। তাই আশঙ্কার প্রহর গুনছেন উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বুধবার থেকেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে শুরু করবে বলে খবর আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে। উত্তাল হবে সমুদ্র। তবে বাংলাদেশের কোথায় আঘাত হানবে এই ঘূর্ণিঝড় তা এখনও স্পষ্ট নয়।
চলতি বছরের মে মাসেই ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছিল বাংলাদেশ। ঘটে প্রাণহানিও। এবার চোখ রাঙাচ্ছে ‘ডানা’। ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে বইতে পারে এই সাইক্লোন। ২২ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের প্রভাবে রাজধানী ঢাকা-সহ, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে।
সতর্কতা জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তরফে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে হবে। যাতে স্বল্প সময়ের নোটিসে সকলে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারেন। আবহাওয়া সংস্থার ঘূর্ণিঝড় অ্যালার্ট অনুসারে, আগামী ২৩ অক্টোবর সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হবে। সেটি ২৩ বা ২৪ অক্টোবর নাগাদ একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
এর আগে গত শনিবার আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ এক ফেসবুকে পোস্টে দেশের আলু চাষিদের পরামর্শ দেন। সেখানে তিনি বলেন, আগামী ২০ অক্টোবরের পরে জমিতে নতুন করে কৃত্রিম সেচ না দেওয়ার জন্য। বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের আলু চাষিদের তিনি এই পরামর্শ দেন। তিনি আরও বলেন, "ঘূর্ণিঝড় ডানা যে সময়ে বাংলাদেশে আঘাত হানবে, সেই সময় বাংলাদেশের কৃষকরা আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। তাই, ২২ অক্টোবরের মধ্যে জমিতে পাকা ধান থাকলে, তা কেটে মাড়াই করে গোলায় ওঠাতে হবে। নাহলে, ফসল নষ্ট হবে।" ফলে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের প্রমাদ গুনছেন বাংলাদেশিরাও।