সুকুমার সরকার, ঢাকা: আগেই বিদেশে বাজিমাত করেছে বাংলাদেশের কাঁচা আম। এবার সুস্বাদু মিষ্টি পাকা আমও রপ্তানি করা হবে। বিশ্বের ২৮টি দেশে। জিভে জল আনা এই ফল সাধারণত বিক্রি হয় বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন সুপার শপে। আর ক্রেতারা সাধারণত প্রবাসী বাংলাদেশি। তবে চলতি বছর ইউরোপের মূলধারার চেন শপেও আম পাঠানো হচ্ছে। তবে রপ্তানি বাড়াতে স্থানীয় পর্যায়ে প্যাকিং ও বিতরণের ব্যবস্থা প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্বে মোট আম উৎপাদনের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সাড়ে ২৩ লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে। আর রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ৭৫৭ মেট্রিক টন। রপ্তানি বাড়লে চাষিরা ভাল দাম পাবেন। এর অন্যথায় তাঁরা উৎসাহ হারাবেন বলে মনে করেছেন বিশ্লেষকরা।
কৃষিমন্ত্রক সূত্র জানিয়েছে, এ বছর বিশ্বের ২৮টি দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হচ্ছে। অস্ট্রিয়া, বাহরাইন, বেলজিয়াম, কানাডা, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হংকং, আয়ারল্যান্ড, ইটালি, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, মালদ্বীপ, নেদারল্যান্ডস, ওমান, পর্তুগাল, কাতার, রাশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ব্রিটেন, আমেরিকায় রপ্তানি হচ্ছে আম। বর্তমানে গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙা, ফজলি, আম্রপালি ও সুরমা জাতের আম রপ্তানি হচ্ছে। ঢাকার ‘মিষ্টি’ উদ্যোগে দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: লাশ টুকরো টুকরো করে খালে! ঢাকায় ‘কিলার কাপলে’র কাণ্ডে হতবাক তদন্তকারীরা]
বলে রাখা ভাল, কাঁচা আমের কুচি থেকে তৈরি শরবত কিংবা ডাল, চাটনি প্রবল রৌদের তাপে প্রাণ জুড়োয়। একথা বাঙালি যতটা ভাল জানে, ততটা বোধহয় আর কেউই উপলব্ধি করতে পারে না। তাতে কী? এবার কাঁচা আমের স্বাদে মজেছেন ইউরোপীয়রা! আর তাঁদের স্বাদপূরণে বাংলাদেশের সীতাকুণ্ড থেকে রপ্তানি করা হচ্ছে কাঁচা আম। তারাও বুঝেছেন, গ্রীষ্মে শীতলতার আমেজ পেতে কাঁচা আমের জুড়ি মেলা ভার। তাই গত মারচ মাসের শেষাধে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে কাঁচা আম রপ্তানি হয়েছিল ইটালিতে।
আম রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প’ ২০২২ সালে শুরু হয়েছে। শেষ হবে ২০২৭ সালে। ৪৭ কোটি আট লক্ষ টাকা ব্যয়ে দেশের ১৫টি জেলার ৪৬টি উপজেলায় প্রকল্পটির কাজ চলছে। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, রপ্তানিকারকদের সহায়তার লক্ষ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে ৫টি ম্যাংগো গ্রেডিং, ক্লিনিং ও কুলিং শেডের নির্মাণকাজ চলছে। বিপণনে মার্কেট লিংকেজ স্থাপন ও লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।