সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের (Bangladesh Explosion) রাজধানী ঢাকার কেরানিগঞ্জ থানার এক মাদ্রাসা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে নারী ও শিশু-সহ চারজন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে মাদ্রাসাটির একতলা ভবনের বেশ কয়েকটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, কেমিক্যাল জাতীয় দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ কেরানিগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার একতলা ভবনে এই বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুরের দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে ভবনের চারপাশের দেয়াল উড়ে যায়। বিস্ফোরণে একতলা ভবনের দুটি কক্ষের দেয়াল সম্পূর্ণ ধসে পড়ে এবং ছাদ ও বিমে ফাটল দেখা দেয়। পাশের আরও দুটি কক্ষেও ফাটল ধরেছে। এ ছাড়া সংলগ্ন একটি ভবনের দেয়াল ও জানালাও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাদ্রাসাটিতে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। তাই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
বিস্ফোরণে মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তার স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লা (৭) আহত হয়। আহতদের মধ্যে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
জানা গিয়েছে, ভবনটির এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হত। অন্য পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন পরিবার-সহ গত তিন বছর ধরে বসবাস করতেন। পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবীর জানাচ্ছেন, ''বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবপত্রও ভেঙে পড়েছে।'' জাকির হোসেন নামের আরেকজন জানাচ্ছেন, ''আমি গ্যারেজে গাড়ি রেখে বাসায় যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণ হলে ওপর থেকে ইট পড়ে আমার মাথায় লাগে। আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। স্থানীয়রা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।''
বাড়ির মালিক পারভীন বেগম জানাচ্ছেন, ''তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আলামিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝে মাঝে মাদ্রাসায় আসতেন এবং আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে। পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।''
দক্ষিণ কেরানিগঞ্জ থানার ওসি সাইফুল আলম জানাচ্ছেন, ''ঘটনাস্থলে বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করেছে। ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ অভিযোগ দায়ের করা করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে ক্রাইম সিন ইউনিট ও বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট তদন্ত করে দেখছে।''
