সুকুমার সরকার, ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় মোকায় লণ্ডভণ্ড বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। সেখানে কমপক্ষে বিধ্বস্ত হয়েছে ৮০ শতাংশ ঘরবাড়ি। রবিবার দুপুর থেকে সেন্ট মার্টিনে তাণ্ডব চালায় মোকা। তবে বাংলাদেশে যতটা ক্ষতি আশঙ্কা করা হয়েছিল তা হয়নি। কারণ, আগেভাগেউ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বাসিন্দাদের।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের মারে সেন্ট মার্টিনের পাশাপাশি লণ্ডভণ্ড হয়েছে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেকনাফ ও উখিয়া। ঘূর্ণিঝড়ে এই দুই উপজেলায় ১২ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ১ হাজার ২০০ ঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে খবর। মায়ানমারের স্থলভাগে তাণ্ডব চালিয়ে শেষে মোকার শক্তিক্ষয় হয়েছে বলে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান রবিবার সন্ধ্যায় জানান, দেশের উপকূল অতিক্রম করে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকা (Cyclone Mocha) উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সামান্য দুর্বল হয়েছে। উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। উপকূলে আঘাত হানার সময় গতি ছিল ১৮০ কিলোমিটার। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ২ হাজার ৭০০ ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে প্রায় সবগুলোই আংশিক অথবা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকার মূল আঘাত হয় মায়ানমারে। যে কারণে বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকি অনেক কমেছে।
[আরও পড়ুন: ‘মোকা’র দাপটের মাঝেও সমুদ্রে সেলফি তোলার হিড়িক! মন্ত্রীকে ফোন করে সতর্কবার্তা হাসিনার]
এদিন প্রচণ্ড ঝড়ের সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি হয় কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। ঝড়ে দ্বীপের অধিকাংশ ঘরবাড়ি, হোটেল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রচুর গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, পাকাবাড়ি বাদে এই দিকটির ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি, দোকানপাট তছনছ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ধ্বংস হয়েছে অধিকাংশ গাছপালা। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা গত রাত নির্ঘুম পার করেছেন আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে। যদিও এদের বড় একটি অংশ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিলেও আতঙ্ক ছিল।