সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারত পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোনও পিঁয়াজ পাঠানো হবে না বাংলাদেশে (Bangladesh)। আর এই খবরের জেরেই সে দেশের বাজারে পিঁয়াজের দাম চড়চড় করে বেড়ে ডবল সেঞ্চুরি হাঁকাল! এর আগে কেজি প্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে পিঁয়াজের (Onion)দাম ঘোরাফেরা করছিল। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানী ঢাকার বাজারগুলিতে প্রতি কেজি পিঁয়াজের ৮০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশে পিঁয়াজের উৎপাদন হলেও এক বিরাট অংশ প্রতি বছর ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। প্রতি কেজি ৩০/৪০ টাকার পেঁয়াজ গত নভেম্বরে প্রথম সপ্তাহে ৮০ টাকা দরে গিয়ে ওঠে। এর পর মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত হয়।
বৃহস্পতিবার ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পিঁয়াজ রপ্তানি (Export) করবে না। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর ভারত প্রতি টন পিঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলা হয়েছিল। তার আগেই ভারত পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিল। যদিও কোনও দেশের সরকার অনুরোধ করলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানির সুযোগ দিতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: চাকায় আর কাঁটা নয়, বেআইনি পার্কিং ঠেকাতে পুরসভার হাতিয়ার নতুন অ্যাপ]
বাংলাদেশে বছরে পিঁয়াজের চাহিদা ২৫ লক্ষ টনের বেশি। গত অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লক্ষ টনের মতো। তবে খেত থেকে তুলে সংরক্ষণ করা পর্যন্ত প্রায় ৪০ শতাংশ পিঁয়াজ নষ্ট হয়। ফলে প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ লক্ষ টন আমদানি করতে হয়, যার ৯০ শতাংশের বেশি আসে ভারত (India) থেকে। এ জন্য ভারত পিঁয়াজের উপর কোনও ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে প্রভাব পড়ে। যেমন হয়েছিল ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ভারত পিঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
[আরও পড়ুন: কলকাতা ছুঁয়ে দার্জিলিংয়ে সাইবেরিয়ার জোড়া বাঘ! বিনিময়ে বিদেশ পাড়ি রেড পান্ডার]
এ সপ্তাহেও ঢাকার খুচরো বাজারগুলিতে ভারতীয় পিঁয়াজ ১০৬ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল। ঘণ্টাখানেক পরে বাজারে খবর ছড়িয়ে পড়ে, ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার খবর। আমদানিকারকদের কাছে ফোন করে বিষয়টি নিশ্চিত হতেই ব্যবসায়ীদের চোখেমুখে বিজয়ের হাসি। এর পর থেকেই দাম চড়চড়িয়ে বাড়ছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বেড়েছে হেঁশেলের এই উপকরণটির দাম। প্রতি কেজি পিঁয়াজ বিক্রি হয় ১৮০ টাকায়। একই চিত্র দেখা গেছে, দেশি পিঁয়াজের ক্ষেত্রেও। সকালে দাম ছিল ১৩৬-১৪০ টাকা, আর সন্ধ্যায় তা বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি। সেই হিসাবে ১২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টায় কেজিতে বেড়েছে ৮০ টাকা। দাম যত বাড়ছে, খুচরা-পাইকারি প্রতিটি দোকানে ভিড় বাড়ছে ক্রেতার।