সুকুমার সরকার, ঢাকা: দেশে অরাজক পরিস্থিতির জেরে তিনমাস ধরে ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গোপন আস্তানা থেকেই তিনি বদলে যাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে মাঝেমধ্যে বক্তব্য রাখছেন। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের পক্ষে আগেই সওয়াল করেছিল নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবার গদিচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে ফেরাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড কর্নার নোটিস জারি করতে চলেছে ইউনুস সরকার। শুধু তাই নয়, আওয়ামি লিগের সমস্ত পলাতক নেতাদের বিরুদ্ধেই এই নোটিস জারি করা হবে। রবিবার ঢাকায় একথা জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
রবিবার ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পুরাতন ভবনের সংস্কার কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ড. আসিফ নজরুল একথা জানান। আইন উপদেষ্টার কথায়, ''আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) দেওয়া আওয়ামি লিগের অভিযোগ সরকার আমলে নিচ্ছে না। দেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন করতেই সরকারের বিরুদ্ধে আইসিসিতে অভিযোগ দিয়েছে আওয়ামি লিগ। অভিযোগটি কোনওভাবেই গৃহীত হওয়ার কারণ নেই।'' আসিফ নজরুল আরও বলেন, ''এটা কোনও মামলা না, এটা আইসিসির প্রসিকিউশন অফিসকে একটা পিটিশন লেখে জানানো। এটা পৃথিবীর যে কোনও মানুষ করতে পারে। এটা এতই অবিশ্বাস্য ও হীনতামূলক মামলা কোনওভাবেই এটার রিট হওয়ার কারণ নাই। এটা ফ্যাসিস্ট চক্র। বিশ্ব জনমতকে, বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য, নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য মিথ্যা প্রচার চালানোর উপায় হিসেবে এই মামলাটা করেছে।''
এদিকে, শেখ হাসিনার ভাইরাল হওয়া অডিওর নির্দেশ অনুযায়ী রবিবার ঢাকার রাস্তায় সমাবেশের আয়োজন করে ১০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অভিযোগ, তাঁরা সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ব্যবহার করে মিছিলে ভাঙচুরের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছিলেন। ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, সম্প্রতি ভাইরাল অডিও বার্তায় শেখ হাসিনা দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে দলের নেতা-কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ব্যবহার করে মিছিল সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এখনও পর্যন্ত দশজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। তাঁদের হেফাজত হতে বিপুল উসকানিমূলক পোস্টার, ছবি-সহ প্ল্যাকার্ড ও নগদ অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়।