সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথমে চিঠি পাঠিয়ে সদ্যনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। তার পর সরাসরি ফোনে কথা বলেছেন শেখ হাসিনা! আর দুক্ষেত্রেই নিজেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন হাসিনা। যা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের কপালে। সূত্রের খবর, বিষয়টি জানতে পেরেই তড়িঘড়ি মধ্যরাতেই ইউনুসের কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে। আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের বাংলাদেশ নীতি নিয়েও আশঙ্কা ও উদ্বেগের আবহ ধীরে ধীরে দানা বাঁধছে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হতেই অভিনন্দন বার্তা পাঠাতে শুরু করেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। পরে ট্রাম্পকে কেউ কেউ ফোন করেন। এই আবহেই গণঅভ্যুত্থানের জেরে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা অভিনন্দন বার্তা পাঠান ট্রাম্পকে। চিঠিটি পাঠানো হয় তাঁর দল আওয়ামি লিগের তরফে। হাসিনার অভিনন্দন বার্তায় তাঁকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ হিসাবে চিহ্নিত করে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে আওয়ামি লিগ। যা দেখে চমকে যান অনেকেই। আওয়ামি লিগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ আওয়ামি লিগের সভাপতি, (প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনা আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ডট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রথমবার প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সময় ট্রাম্প ও তাঁর স্ত্রী মেলানিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর বৈঠক ও কথোপকথন তিনি স্মরণ করেছেন।’
একই সঙ্গে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে। শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেছেন, ফের তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবেন। ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসও। ঘটনাচক্রে এর পরই জানা যায়, ট্রাম্পকে ফোন করেও কথা বলেছেন শেখ হাসিনা। তার পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা মহলে এই আশঙ্কাই দানা বেঁধেছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন হয়ত হাসিনা সরকারকেই ‘বৈধ’ বলে স্বীকৃতি দিতে পারে। সেক্ষেত্রে কী করণীয়, তা নিয়ে রাতেই জরুরি বৈঠক হয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে। বাংলাদেশের প্রতিটি অলি-গলি এবং আমজনতার মধ্যেও জল্পনা, ট্রাম্পের হাত ধরেই হয়ত মসনদে প্রত্যাবর্তন ঘটতে পারে হাসিনার। অন্তত সেই স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে আওয়ামি লিগ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি উত্তাল বাংলাদেশে হিন্দুদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এই আবহে চট্টগ্রামে হিন্দুদের উপর হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছে ভারত। অবিলম্বে এই ঘটনার জন্য দায়ী চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও দাবি করেছে দিল্লি। বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “চট্টগ্রামে হিন্দুদের এবং তাঁদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের উপর হামলার সূত্রপাত হিন্দুদের উদ্দেশে ‘উস্কানিমূলক’ সোশাল মিডিয়া পোস্ট থেকে। এটা স্পষ্ট যে, এর পিছনে চরমপন্থীরা রয়েছে। ভারত সরকার হিন্দুদের ভয় দেখানো এবং হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে লক্ষ্য করে হামলার বেশ কিছু ভিডিও দেখেছে। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ধরনের ঘটনা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং সাম্প্রদায়িক ভারসাম্য নষ্ট করবে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং হামলার জন্য দায়ী চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে জোরাল ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।” ফলে সব মিলিয়ে বাড়ছে ইউনুস সরকারের উপরে।