সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৭ বছর পরে ফিরেছেন দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান (Tarique Rahman)। তাঁর দেশে ফেরা এই মুহূর্তে ঢাকার রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেখা গিয়েছে, নিউইয়র্ক টাইমসের মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং রয়টার্স, এএফপির মতো সংবাদ সংস্থা তারেককে ‘সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী’ বলেই উল্লেখ করেছে।
৬০ বছর বয়সি তারেক ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে ছিলেন। সেই হিসেবে প্রায় দেড় দশকেরও বেশি সময় তিনি দেশেই ছিলেন না। কিন্তু খালেদা জিয়ার প্রবল অসুস্থতার সময় তাঁকেই যে সামনে রেখে এগোতে চাইছে বিএনপি, তা স্পষ্ট। তারেক ফেরায় দলের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। এদিন ফেরার পর যে ভাষণ তিনি দিয়েছেন, সেখানে মার্টিন লুথার কিংয়ের ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’-এর সঙ্গে তুলনা করে স্লোগান দিয়েছেন, ''আই হ্যাভ আ প্ল্যান।'' যদিও ঠিক কী পরিকল্পনা তাঁর রয়েছে সেকথা জানাননি 'ডার্ক প্রিন্স'।
ফাইল চিত্র
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা তাঁর। মনে করা হচ্ছে, একসময় যে জামাতকে সঙ্গে নিয়েই বিএনপি লড়াই করেছিল, এবার তারাই হতে পারে তাদের পথের কাঁটা। কাজেই বিএনপি ও তারেকের সাফল্যের বিপ্রতীপে জামাত যে বড় বাধা হতে পারে, সেকথা বলাই যায়। আপাতত সেটাই তারেকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাঁকেই এই নির্বাচনের অন্যতম শীর্ষবাছাই হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারও বেড়েছে। প্রকাশ্যে দীপু দাসকে খুনের পর কোণঠাসা সংখ্যালঘুরা। এই পরিস্থিতিতে এদিন তারেককে বলতে শোনা গিয়েছে, ''সবাই মিলে এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলব আমরা, যা একজন মা দেখেন। অর্থাৎ একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশে একজন মানুষ নিরাপদে ঘর থেকে বের হতে পারে ও ঘরে ফিরে আসতে পারে।''
কেউ কেউ মনে করছেন, সব কিছু এতটাও সহজ হবে না তারেকের পক্ষে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বাইরে ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতাও অনেকটাই বদলে গিয়েছে। ‘মাটি’ বুঝতেই অনেকটাই সময় ব্যয় করতে হবে তারেককে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে জামাত বাংলাদেশে যে আবহাওয়া তৈরি করে রেখেছে, তার মোকাবিলা করতে সম্পূর্ণ বিপরীত এবং সর্বজনগ্রাহ্য অবস্থান নিতে হবে তাঁকে। এহেন টানটান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্কে তারেক কতটা ভূমিকা রাখতে পারেন, সত্যিই প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন কিনা তা জানতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
