নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: বাংলাদেশের উত্তরের জেলা রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দুদের বাড়ি ঘরে হামলার ঘটনায় ১২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর মেরামতের কাজ চলছে। বলা হচ্ছে, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ১২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক আক্রান্ত গঙ্গাচড়া থানায় মামলা করেন।
পুলিশ বলছে, সোশাল মিডিয়ায় ধর্মীয় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে গত শনিবার রাতে এক কিশোরকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরদিন সাইবার সুরক্ষা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হয়। আদালত তাকে শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছে। ওই কিশোর এক বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। আর এই ঘটনাতেই উত্তেজিত জনতা শনিবার রাতে ওই কিশোরের বিচারের দাবিতে মিছিল করে। পরে তার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। একই সময় আশপাশের কয়েকটি বাড়িতেও হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। পরে রাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তার আগে, মাইকিং করে সেখানে লোকজন জড়ো করে ওই হিন্দু এলাকার অন্তত ১৮টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামত করে দিচ্ছে প্রশাসন। মঙ্গলবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িগুলো মেরামত শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গ্রামে এখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন আর কোনও আতঙ্ক নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তিনি বলেন, অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরান বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত রয়েছে।
ক’দিন আগেই আমেরিকার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশনের এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর জীবন বিপন্ন। তাঁরা স্বাধীনভাবে ধর্মাচরণ করতে পারছেন না। এবার ফের প্রকাশ্যে এল সেদেশে হিন্দু নির্যাতনের করুণ ছবি।
