সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধতেও ভারতের অবদান ভোলানোর চেষ্টা! বিজয় দিবসে স্রেফ ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা করায় বাংলাদেশে পোড়ানো হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট করা হয়েছে, এই অভিযোগ এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোদির কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। অথচ প্রধানমন্ত্রীর বিজয় দিবসের পোস্টে বাংলাদেশের উল্লেখমাত্র ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার সোশাল মিডিয়া পোস্টে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন একাত্তরের যুদ্ধে পাক বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করা ভারতীয় জওয়ানদের। যাঁদের বীরত্বে সার্থক হয়েছিল মুক্তি বাহিনী ও বাংলাদেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষের স্বপ্ন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি একবারও উল্লেখ করেননি মোদি।
এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “বিজয় দিবসে আমরা সেই সাহসী সৈন্যদের স্মরণ করছি যাঁদের আত্মত্যাগ ১৯৭১ সালে ভারতকে ঐতিহাসিক বিজয় এনে দিয়েছিল। তাঁদের দৃঢ় সংকল্প এবং নিঃস্বার্থ সেবা আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের ইতিহাসে গর্বের মুহূর্ত স্থাপন করেছে। এই দিনটি তাঁদের বীরত্বের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি, তাঁদের অতুলনীয় চেতনার স্মারক। তাঁদের বীরত্ব প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অনুপ্রাণিত করে চলেছে আমাদের।”
মোদির এই পোস্টই নাকি তথাকথিত 'বাংলাদেশের বিজয়'কে ‘কলঙ্কিত’ করেছে। এই অভিযোগ তুলে 'আধিপত্যবাদবিরোধী' ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রী মোদির কুশপুতুল দাহ করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়া তারা মধুর ক্যান্টিনের পাশে নরেন্দ্র মোদির একটি স্টিকার লাগানো হয়, সেটাকে পদদলিত করার জন্য। সে সময় নানারকম ভারত বিরোধী স্লোগানও দেওয়া হয়। ‘কসাই মোদির গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘বাংলাদেশ-বাংলাদেশ, জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দেবে জনগণ’ শ্লোগানে মুখরিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর।
কর্মসূচির আয়োজকদের অন্যতম রিয়াদুস জুবাহর বক্তব্য, ‘বাংলাদেশে গত ১৭ বছরের যে অপশাসন চলেছে, সে অপশাসনের মদদাতা হচ্ছে ভারত। তাই বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের এই প্রতিবাদ।’ ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, যে পোস্টে বাংলাদেশের উল্লেখই নেই, তাতে কীভাবে বাংলাদেশের অপমান হল? আসলে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে ভারত বিরোধিতা চরমে। সেই বিরোধিতার মাত্রা এখন এতটাই যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধীনতায় ভারতের অবদানও ভুলতে বসেছে ইসলামি ছাত্ররা।
