সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডে জারি পুলিশি ধরপাকড়। এই ঘটনায় শুক্রবার রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার আগে এক দম্পতি-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সুতরাং সবমিলিয়ে ধৃত মোট ৭। সিসি ক্যামেরার ফুটেজের উপর ভিত্তি করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলেই খবর।
ধৃতেরা হল মিজানুর রহমান ওরফে কেটু মিজান, গোলাপি, আল আমিন এবং মহম্মদ স্বাধীন। মিজানুর ও গোলাপি সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। এছাড়া ধৃত আরও তিনজন হল ফয়সাল হাসান, শাহ জামাল এবং সুমন। পাবনার চাটমোহনের পাঁচবারিয়ার বাসিন্দা ফয়সাল। জামাল এবং সুমন কুমিল্লার হোমনার কাশীপুর এলাকার বাসিন্দা। ঠিক কী কারণে ওই সাংবাদিককে খুন করা হল, খুনের নেপথ্যে ধৃতদের ভূমিকা কী - সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ‘দৈনিক প্রতিদিন’ নামে সংবাদপত্রের গাজীপুরের সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন তুহিন। বুধবার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় দুষ্কৃতীদের তোলা আদায়ের ভিডিও রেকর্ডিং করেছিলেন তিনি। এরপরই পাঁচ-ছ’জন দুষ্কৃতী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তাঁকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তুহিন দৌড়ে ইদগাঁ মার্কেটের একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নেন। পরে দুষ্কৃতীরা তাঁকে দোকানের ভিতরে ঢুকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। উপুর্যপরি কোপানোয় তুহিনের মৃত্যু হলে দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমি দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ তুহিন দৌড়ে এসে আমার দোকানে ঢুকে পড়েন। পরে তিনজন আমার দোকানের ভেতরে ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় দোকানের বাইরে দুজন রামদা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমি বাঁধা দিতে গেলে তাঁরাও আমাকে কুপিয়ে হত্যা করার হুমকি দেয়। ওই সময় অনেক লোক তাকিয়ে দেখেছে, কিন্তু কেউ বাঁচাতে আসেনি।’’ সাংবাদিক আসাদুজ্জামানের ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, এদিন রাত আটটার দিকে চৌরাস্তা এলাকার একটি ভিডিও শেয়ার করে লেখেন, ‘‘যেমন খুশি তেমন রাস্তা পার হওয়ার দৃশ্য, গাজীপুর চৌরাস্তা।’’ গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মহম্মদ রবিউল হাসান বলেন, ‘‘আমরা এই ঘটনায় কিছু ভিডিও ফুটেজ হাতে পেয়েছি। কিছু ইঙ্গিতও পেয়েছি। আমরা এ ঘটনার জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছি।” গাজীপুরের বাসন থানার ওসি শাহিন খান জানান, খবর পেয়ে বাসন থানা–পুলিশ নিহত সাংবাদিকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
