সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনুসকে ফোন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের। দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। শেখ হাসিনার গদিচ্যুত হওয়ার পিছনে অনেকেই ইসলামাবাদের ষড়যন্ত্র দেখছেন। ফলে মুজিবকন্যার অনুপস্থিতির সুযোগে ঢাকার সঙ্গে দহরম-মহরম বাড়াচ্ছে ইসলামাবাদ। আর এতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত। বিশ্লেষকদের মতে, দুদেশের সম্পর্ক মজবুত হলে পাক মদতে বাংলাদেশে মাথাচারা দিয়ে উঠবে জঙ্গি সংগঠনগুলো। যার ফলে অসম, মণিপুরের মতো রাজ্যগুলোতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাবে।
আজ শুক্রবার, প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসকে ফোন করেন শাহবাজ শরিফের। নব গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানান পাক প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইউনুসের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশের বন্যায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির জন্য সমবেদনা জানান শাহবাজ। জানা গিয়েছে, দুদেশের জনগণের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন ইউনুস। হাসিনার আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। ফলে এখন মুজিবকন্যার পদত্যাগের সুযোগকে কাজে লাগাতে চাইছে ইসলামাবাদ। তাই এদিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার গুরুত্বের উপর বিশেষ জোর দেন শাহবাজ। দুদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধন উল্লেখ করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও যোগাযোগ আরও জোরদার করার বিষয়েও গভীর ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: গুলশন হামলার স্মারক গুঁড়িয়ে দিল জঙ্গিরা! ইসলামিক রাষ্ট্র হওয়ার পথে বাংলাদেশ?]
কয়েকদিন আগেই ইসলামাবাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন খালেদা জিয়ার দল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হাসিনার অনুপস্থিতিতে বিএনপি-জামাতের মতো দলের সঙ্গে ‘জোট’ আরও মজবুত করে ঢাকায় প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে পাকিস্তান। যাতে ভারতের উপরেও চাপ বৃদ্ধি করা যায়। এখন তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতেও উদ্যোগী হয়েছে। যাতে ভারত সম্পর্কে এই সরকারের কী মনোভাব তা জানা যায়। আর এই গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে দিল্লি। আগামিদিনে পাকিস্তানের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক মধুর হলে ভারত কী বার্তা দেয় সেদিকেই নজর আন্তর্জাতিক মহলের।