সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরকারের মদতে জামাত শিবিরই খুন করিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে (Osman Hadi) ! এই খুনের নেপথ্যে সরকারের অদৃশ্য হাত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন বাংলাদেশের প্রতিবাদী সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে অশান্তির আগুনে ছুড়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। শুধু তাই নয়, হত্যাকারী ভারতে পালিয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে এই হত্যাকাণ্ডে ভারতযোগের ইঙ্গিত দেওয়া হয়। যদিও সে দাবি খারিজ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। সব মিলিয়ে হাদি খুনে গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
রবিবার রাতে সোশাল মিডিয়ায় এক বিস্ফোরক পোস্ট করেন প্রতিবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তিনি লেখেন, 'কয়েক ঘণ্টা ধরে জিহাদিরা ডেইলি স্টার, প্রথম আলো, ছায়ানট, আর উদীচীর কার্যালয় লুঠ করেছে, ভেঙেছে, পুড়িয়েছে। পুলিশ আসেনি। মনে হচ্ছে গোটা ব্যাপারটাই করিয়েছে সরকার। পুলিশ সরকারের গ্রিন সিগন্যাল পায়নি বলে কর্মস্থল ত্যাগ করেনি। দীপু কাণ্ডেও ভিকটিমের মৃত্যু হয়ে যাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসেছে। সময় মতো পুলিশকে আসতে বাধা দেয় কারা? হয়তো তারাই, যারা পুলিশকে নির্দেশ দেয়, এবং বলে দেয় নির্দেশ ছাড়া কোথাও, বিশেষ করে সেনসিটিভ কেসে, আচমকা উদয় না হতে!' এরপরই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে তসলিমা লেখেন, 'হাদির সম্ভাব্য আততায়ী ফয়জলের অ্যাকাউন্টে ১২৫ কোটি টাকার লেনদেন পাওয়া গিয়েছে। টাকাটা কে দিল? সরকারের অদৃশ্য হাত নয় তো?'
তসলিমার এই পোস্টের পরই উঁকি দিতে শুরু করেছে সন্দেহ। হাদির মৃত্যুর খবর সামনে আসার পর গোটা দেশ যখন জ্বলছে ঠিক সেই সময়ে আশ্চর্যভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় বাংলাদেশের পুলিশবাহিনী। কোথাও তাদের কোনও কার্যকলাপ নজরে আসেনি। রটিয়ে দেওয়া হয় হাদির হত্যাকারী নাকি ভারতে পালিয়েছে। তবে খোদ বাংলাদেশ পুলিশ এমন তথ্যে কোনও শিলমোহর দেয়নি। বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি খন্দকার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, হাদির হত্যাকারী ফয়জল করিম বাংলাদেশের সীমান্ত পার হয়ে গেছেন কি না, তা নিয়ে তাদের কাছে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য নেই। এমনকী তিনি এও বলেন, 'অনেক সময়ই তন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতে নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়।'
এহেন পরিস্থিতিতে অনুমান করা হচ্ছে, এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে ভয়ংকর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। হতে পারে, নির্বাচনকে মাথায় রেখে জামাত শিবিরই খুন করেছে হাদিকে। এই খুনের ষড়যন্ত্রে প্রত্যক্ষ মদত ছিল ইউনুস সরকার। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচনে ভারত বিদ্বেষের ভিতের উপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া জামাত। হাদির হত্যা জামাতের সেই উদ্দেশ্যকেই সফল করছে। বাংলাদেশের বর্তমান ইউনুস সরকার চলছে জামাতেরই অঙ্গুলিহেলনে।
ফলে গোটা ঘটনায় ইউনুস সরকার ও পুলিশের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে। হত্যাকারীকে কে বা কারা ১২৫ কোটি টাকা পাঠাল? হাদির মৃত্যুর পর মুহূর্তেই পর পর এতগুলি পরিকল্পিত হামলা চলল কীভাবে? বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে এক শিশুকে পুড়িয়ে মারা হল, এতকিছুর পরও পুলিশের দেখা পাওয়া গেল না। স্বাভাবিকভাবেই এইসব ঘটনা গভীর প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। এর পাশাপাশি অল্প সময়ের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয় আততায়ী ভারত পালিয়েছে। দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সেই গুজব। জামাতের এই দাবির কোনও ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছে খোদ পুলিশ।
