সুকুমার সরকার, ঢাকা: আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘন করে ইলিশ শিকারের অভিযোগ। ভারতের ৩১ মৎস্যজীবীর বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশের নৌসেনা। দিন তিনেক আগে বাংলাদেশে ঢুকে ইলিশ ধরার অভিযোগে আটক করা হয় কাকদ্বীপের দুটি ফিশিং ট্রলার। বুধবারের এই ঘটনার খবর পেয়ে উদ্বেগে মৎস্যজীবীদের পরিবারে। কীভাবে, কখন তাঁরা ছাড়া পাবেন, সেটাই এখন মূল চিন্তার বিষয় পরিজনদের কাছে। এই মুহূর্তে মৎস্যজীবীদের কলাপাড়া থানায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় ৫০০ মণ মাছ।
মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের সাগর ও নদীতে মাছ ধরার উপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এই আইন প্রতিবছর বলবৎ করা হয়। কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক মহম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন, ভারতীয় এই মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশের জলসীমায় অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেন। তার পর জাল দিয়ে মাছ ধরেন। নৌবাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালানোর সময় ৩১ জন মৎস্যজীবী-সহ দুটি ট্রলার আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০-এর ২৫(১) ও (২৮) ধারায় কলাপাড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার মরশুমে বঙ্গোপসাগরে টহল চলছিল বাংলাদেশের নৌবাহিনীর। বিএনএস শহিদ আখতার উদ্দিন নামে একটি জাহাজ নিযুক্ত ছিল এই কাজে। গত ১৪ অক্টোবর তার রাডারে ধরা পড়ে সন্দেহজনক দুটি মাছ ধরার ট্রলার। ভালোভাবে পর্যবেক্ষণের পর নৌবাহিনী দাবি করে, ট্রলার দুটিতে ভারতীয় পতাকা ছিল। এর পর ওই জলসীমাতেই ট্রলার দুটিকে আটক করা হয়। পরে পটুয়াখালি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৩১ জন মৎস্যজীবী-সহ কাকদ্বীপের ওই দুটি ট্রলারকে। তার পর মৎস্যজীবীদের স্থানান্তরিত করা হয় কলাপাড়া থানায়।
আসলে, বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার এই জলসীমা নিয়ে বরাবরই জটিলতা রয়েছে দুদেশের মধ্যে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে যাওয়া মৎস্যজীবীদের দাবি, তাঁরা নিজেদের জলসীমায় মাছ ধরছিলেন। আর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দাবি, এই নিষেধাজ্ঞার মাঝেও মৎস্যজীবীরা তাঁদের জলসীমায় ঢুকেছিলেন ইলিশ ধরতে, যা বেআইনি কাজ। সেই কারণে মৎস্যজীবী-সহ ট্রলার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এখন মৎস্যজীবীদের চিন্তায় উদ্বিগ্ন তাঁদের পরিবার।