সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে বাংলাদেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিশৃঙ্খলা। রাজধানী ঢাকায়, একের পর হিংসার ঘটনায় বাড়ছে উদ্বেগ। ময়মনসিংহে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে এক হিন্দু যুবককে। নারকীয় এই ঘটনায় স্তম্ভিত সারা বিশ্ব। আগুন লাগানো হয়েছে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুই সংবাদমাধ্যমের অফিসে। দেশের অভ্যন্তরে চলতে থাকা অস্থিরতার মাঝেই এবার বিপাক বাড়ল প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের। রাষ্ট্রসংঘের প্রশ্নের মুখে তার প্রশাসন। সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হল, সরকারকেই নিতে হবে এই ঘটনার দায়। দ্রুত ফেরাতে হবে স্থিতিশীলতা।
বাংলাদেশ নিজের দেশের অভ্যন্তরে প্রবল অস্থিরতার মধ্যেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক এই সময়ে, ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির হত্যার পর রাষ্ট্রসংঘ একটি কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত, নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশপাশি, সতর্ক করে দিয়েছেন হিংসা এবং প্রতিশোধের রাজনীতি আসন্ন নির্বাচনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণকে ব্যাহত করতে পারে।
হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশ জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। দুই গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমের অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি সাংবাদিকদের উপর হামলার খবরে উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক মহল। তুর্ক জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষের নিরাপদে জীবনযাপন এবং ভিন্ন মত প্রকাশের স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ আসলে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মুহূর্তে দেশের স্থিতিশীলতা এবং মানবাধিকারের প্রশ্নে ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী উদ্বেগকে তুলে ধরে।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন তিনি। বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। সেই সময় নমাজ সেরে রিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুরে। পুলিশ সূত্রে খবর, মোটর সাইকেলে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। তবে কে বা কারা হামলা করল, তা এখনও অজ্ঞাত।
বুধবার রাতেই ইউনুসের প্রেস উইং জানিয়েছিল, হাদির শারীরিক অবস্থা রীতিমতো উদ্বেগজনক। সেই ঘোষণার পর থেকেই বাড়ছিল আশঙ্কা। অবশেষে বৃহস্পতিবার মেলে দুঃসংবাদ। তারপরই উত্তপ্ত হয় বাংলাদেশ। পুড়িয়ে দেওয়া হয় একের পর এক সংবাদমাধ্যমের অফিস। মুজিবের ধানমাণ্ডির বাড়ি। গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এক হিন্দু যুবককে। তারপর সেই দেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে উল্লাস করতে দেখা যায় একদল যুবককে।
