সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাকির নায়েকের বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক সংঘাত শুরু হয়েছে দিল্লি ও ঢাকার। এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঢাল করলেন মহম্মদ ইউনুস। ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা জাকির ঢাকায় এলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। এই অবস্থায় জাকিরকে বাঁচাতে পালটা পদক্ষেপ নিল বাংলাদেশ। দেশছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে 'পলাতক' ঘোষণা করে একাধিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিল ইউনুস প্রশাসন।
গত শুক্রবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-সহ ২৬১ জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইউনুস সরকার। যে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে দেশ ও বিদেশে বসে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে অভিযুক্তরা। সেই মামলার তদন্তে হাসিনা-সহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসিট পেশ করে তদন্তকারীরা। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই আদালতের তরফে ২৬১ জনকে পলাতক ঘোষণা করা হয়। এরপরই এই ইস্যুতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় ইউনুস প্রশাসনের তরফে। তবে এই পদক্ষেপের নেপথ্যে কূটনৈতিক অঙ্ক দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
বাড়তে থাকা মৌলবাদের আগুনে পাখার বাতাস দিতে আগামী ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশে আসছে কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা জাকির নায়েক। তাঁকে বিশেষ অভ্যর্থনা জানাতে চলেছে মহম্মদ ইউনুসের বাংলাদেশ। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর সোমবার বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ঢাকায় পৌঁছানো মাত্র জাকির নায়েককে আটক করে ভারতের তুলে দেবে বাংলাদেশ, ঢাকার কাছে এমনটাই আশা করে নয়াদিল্লি। জাকিরের বিরুদ্ধে ভারতের রয়েছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। ইউএপিএ ধারায় মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে। উসকানিমূলক বক্তৃতার মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রতি নষ্ট করায় সিদ্ধহস্ত এই কট্টর ধর্মগুরু। ২০১৬ সালে ভারত থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে মালয়েশিয়ায় ঘাঁটি গেড়েছে এই অপরাধী। এমন গুরুতর অপরাধীকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার পরই হাসিনাকে পলাতক ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি পেশ করল বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারতকে বুঝিয়ে দিতে চাইছে হাসিনাকে ঢাকার হাতে তুলে না দিলে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না।
উল্লেখ্য, হাসিনা বিদায়ের পর পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। আইএসআই-এর মদতে বাংলাদেশে ইসলামি সেনা গঠনের পাশাপাশি শীর্ষ পাক সেনা আধিকারিকদের আনাগোনা ব্যাপক বেড়েছে বাংলাদেশে। যা মোটেই ভালো চোখে দেখছে না ভারত। এরই মাঝে জাকিরের সফর বাংলাদেশে মৌলবাদকে আরও বেশি করে উসকে দেওয়ার পরিকল্পনা বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। তার সফরের নেপথ্যে পাকিস্তানের ইন্ধনও থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যাতে মৌলবাদকে অস্ত্র করে ভারতের উত্তর-পূর্বে অস্থিরতা ছড়ানো যায়। পাকিস্তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করা এহেন বাংলাদেশ এবার জাকিরকে রক্ষা করতে হাসিনাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলেই অনুমান কূটনৈতিক মহলের।
