অভিষেক চৌধুরী, কালনা: সাত মাসে ১৭৪ বার টাকা উঠে অ্যাকাউন্ট (Bank Fraud) থেকে। অথচ রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরে আসেনি কোনও মেসেজ। ফলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার কথাও জানতে পারেননি শিক্ষক। যখন জানতে পারলেন তখন প্রায় সব শেষ। সম্বল খুইয়ে মাথায় হাত ওই ব্যক্তির। এমনই ঘটনা ঘটেছে বর্ধমানের (Bardhaman) মন্তেশ্বরের। শেষপর্যন্ত সোমবার মন্তেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রতারিত শিক্ষক। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুদ্ধেশ্বর মান্ডি নামে প্রতারিত ওই ব্যক্তি মন্তেশ্বরের শুশুনিয়া রানীবালা বিদ্যামন্দির নামে এক স্কুলের শিক্ষক। মন্তেশ্বরের সিজনা গ্রামের স্টেট ব্যাংকের শাখায় তাঁর একটি স্যালারি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অভিযোগ, গত কয়েকমাস ধরে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে অনলাইনে সাড়ে পাঁচ লক্ষেরও বেশি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রতারকরা টাকা তুলে নিলেও প্রথমদিকে ব্যাংকের তরফ থেকে কোনও মেসেজই তিনি পাননি বলে অভিযোগ। করোনার জেরে সেভাবে তিনি ব্যাংকেও যেতেন না। মন্তেশ্বর থেকে পাশবুক আপডেট করে নিতেন। কয়েকমাস ধরে মেশিন খারাপ থাকায় তিনি পাশবই আপডেট করতে পারেননি। মেশিন ঠিক হলে কয়েকদিন আগেই তিনি পাশবুক আপডেট করেন।
[আরও পড়ুন: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুবতীর সঙ্গে সহবাস-টাকা আদায়! ‘ভুয়ো’ সাংবাদিককে গণধোলাই জনতার]
তার পরই তাঁর মাথায় হাত। দেখা যায়, অ্যাকাউন্ট থেকে ধাপে-ধাপে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। কখনও ১৬০০, কখনও ৪০০০, কখনও ২০০০ এভাবে সাত মাসে মোট ১৭৪ বার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বুদ্ধেশ্বরবাবু। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও এই বিষয়ে কোনও সদুত্তর পাননি বলে জানান। প্রতারিত শিক্ষক জানিয়েছেন, “২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৯ জুন পর্যন্ত দিনে কয়েকবার করে আমার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হলেও কোনও মেসেজ আসেনি। শেষের দিকে মেসেজ আসার পর পাশবুক আপডেট করতে গিয়ে দেখি অ্যাকাউন্ট থেকে বহু টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। প্রথম থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে এই মেসেজ এলে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটত না।”
শিক্ষকের দাবি, অনলাইনের আর্থিক লেনদেন করেন না তিনি। এই ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকা অথবা তোলার মেসেজ পাঠানোর জন্য গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে টাকাও কেটে নেওয়া হয়। তারপরেও সঠিক সময় সেই মেসেজ না এলে তো এ ধরনের ঘটনা ঘটবেই বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ব্যাংকের ওই শাখার ম্যানেজারকে ফোন করা হলে তিনি এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়ে দেন।