সন্দীপ চক্রবর্তী ও প্রণব সরকার, আগরতলা: মিশন ত্রিপুরা (Tripura)। ২০২৩-এ ত্রিপুরা জয়ের লক্ষ্যে সেখানে পা রাখছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। অভিষেক বরণে ত্রিপুরার প্রস্তুতি একেবারে সারা। কিন্তু ঠিক সেই সময়েই ঘটল বিপত্তি। রাতের অন্ধকারে আগরতলায় তৃণমূলের (TMC) সমস্ত ফ্লেক্স, ব্যানার, হোর্ডিং ছিঁড়ে ফেলা হল। সকালের আলো ফুটতেই দেখা গেল সেসব ছবি। ঘটনায় অভিযোগের তির সেখানকার শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূলের মনোবল ভাঙতেই এমন কাজ বলে ধারণা দলের একাংশের। তবে অভিষেকের সফরের ঠিক আগেই এ ধরনের ঘটনা তৃণমূলের ‘বিপ্লব বিরোধী’ অস্ত্রে আরও শান দিল নিঃসন্দেহে।
পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী, সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ ত্রিপুরেশ্বরী দেবীর মন্দিরে পুজো দিয়েই অভিষেক শুরু করছেন ত্রিপুরা অভিযান। বাংলায় তৃণমূলের বিরাট জয়ের পর সোমবারই প্রথম ত্রিপুরায় পা রাখবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি বাদে বাংলার বাইরে পা রাখার ক্ষেত্রে ত্রিপুরাকে বেছে নেওয়া রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
[আরও পড়ুন: ‘আইনশৃঙ্খলায় উত্তরপ্রদেশকে শীর্ষে নিয়ে গিয়েছেন যোগী’, সার্টিফিকেট দিলেন Amit Shah]
২০ মাস বাদে বিধানসভা ভোট ত্রিপুরা সুন্দরীর রাজ্যে। বঙ্গ ভোটের পর থেকেই তৃণমূল (TMC) নিয়ে ত্রিপুরায় উন্মাদনা শুরু হয়ে গিয়েছে। ত্রিপুরাতেও ‘খেলা হবে’ স্লোগান বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। ভাইরাল হয়েছে ‘ত্রিপুরা কইতাসে মমতাদিদি আইতাসে’ গান। এই অবস্থায় রাজনৈতিক জমি মাপতে আসেন প্রশান্ত কিশোরের টিম। সেই আই প্যাক (I Pac) টিমের সদস্যদের হোটেলে ‘আটকে রাখা ও ঘরবন্দি’ করার মতো অভিযোগের পর রাজনীতির পারদ চড়েছে। দলের কর্মীদের উপর হামলা, পুলিশি নির্যাতন-সহ গণতন্ত্র, উন্নয়ন প্রশ্নে বিজেপির সরকারকে যে অভিষেক তীব্র আক্রমণ করবেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অভিষেক নিয়ে তৃণমূলের ছাত্র যুবদের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা রয়েছে। তাঁর হাত ধরেই ত্রিপুরায় বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের বহু নেতার তৃণমূলে যোগদানের কথা।
[আরও পড়ুন: লক্ষণ অনেকটা করোনার মতোই, কেরলের পরে মহারাষ্ট্রেও মিলেছে Zika Virus! বাড়ছে উদ্বেগ]
অভিষেক বরণে কীভাবে সেজেছে রাজধানী আগরতলা? দেখা গেল, বিমানবন্দর থেকে ২২ মিনিটের গাড়ি সফরে শহরে ঢোকার আগে অভিষেককে স্বাগত জানিয়ে ফ্লেক্স, ব্যানারে ভরে গিয়েছে। ‘ত্রিপুরা দিদিকেই চায়’ ফ্লেক্সে হাত জোড় করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঙালি প্রধান ত্রিপুরায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও তৃণমূলের কার্যকলাপ নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সকালের উড়ানে আগরতলা নেমে সোজা ‘মাতাবাড়ি’তে চলে যাবেন অভিষেক। ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিয়ে আবার আগরতলায় ফিরবেন তিনি। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ সাংবাদিক সম্মেলন করবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সাংগঠনিক বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন। অভিষেকের পাশাপাশি আগরতলায় আসছেন বাংলার দুই মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মুহূর্তে ত্রিপুরায় রয়েছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত, সুদীপ রাহার মতো TMCP-র তরুণ সদস্যরা। সূত্রের খবর, এদিন সন্ধেবেলায় কলকাতা ফিরে আসবেন অভিষেক।