ধীমান রায়, কাটোয়া: ফুঁসছে অজয় নদ, যার জেরে ব্যাপক ক্ষতি বর্ধমানের কৃষিজমির। মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও আউশগ্রাম মিলে ১৩২ টি মৌজায় আমনধানের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে রিপোর্ট দিয়েছে কৃষিদপ্তর। ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষেরও। যার ফলে কৃষকদের মাথায় হাত।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোট ব্লকে ১১ টি অঞ্চল মিলে ১০৭ টি মৌজায় আমনধানের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার সঙ্গে মঙ্গলকোটে ধাক্কা খেয়েছেন সবজি চাষিরাও। এই অঞ্চলগুলির মধ্যে রয়েছে লাখুড়িয়া, গতিষ্ঠা পালিগ্রাম, চাণক, ঝিলু ১, মঙ্গলকোট, ভাল্যগ্রাম, মাজিগ্রাম, নিগন, শিমুলিয়া ১ ও শিমুলিয়া ২ অঞ্চল। মঙ্গলকোট সীমান্ত দিয়ে বয়ে গিয়েছে অজয়নদ।
[আরও পড়ুন: বিশেষ প্রযুক্তিতে কাঁকড়া চাষের জনপ্রিয়তা বাড়ছে জেলায়, অল্প ব্যায়ে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা]
অজয় নদের পাশাপশি মঙ্গলকোটের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে আরও দু’টি নদী, কুনুর ও ব্রাহ্মণী। অজয়নদের জলোচ্ছ্বাস ও নিম্নচাপের প্রভাবে বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষিজমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কৃষকরা জানান, তাঁদের অধিকাংশ জমিতে ধানগাছ ছিল গর্ভাবস্থায়। কোনও কোনও ধানজমিতে ফুল এসে গিয়েছিল। প্লাবনের জেরে সেসব জমির গাছ জমিতে মিশে গিয়েছে। আবার জমির ওপর জমেছে পলিমাটি ও বালির স্তর। তাই ওইসব জমিতে ফসল পাওয়ার আশা কার্যত নেই।
মঙ্গলকোটের পাশাপাশি প্লাবনের প্রভাব পড়েছে আউশগ্রামেও। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রাম ১ ব্লকের বেরেণ্ডা, উক্তা ও আউশগ্রাম অঞ্চল মিলে ১৫টি মৌজায় ধানজমিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আউশগ্রাম ২ ব্লকের রামনগর ও ভেদিয়া অঞ্চল মিলে ৩০ টি মৌজার কৃষিজমি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেতুগ্রাম ২ ব্লকেও কৃষিক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই। জানা গিয়েছে, কেতুগ্রাম ২ ব্লকের ৫২টি মৌজায় কৃষিজমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে নবগ্রাম, বিল্লেশ্বর, সীতাহাটি,গঙ্গাটিকুরি, মৌগ্রাম, কেতুগ্রাম ও নিরোল অঞ্চল। ক্ষতি হয়েছে কেতুগ্রাম ১ ব্লকের পালিটা, পাণ্ডুগ্রাম, রাজুর এই তিন অঞ্চলের ১৫ টি মৌজায়। এছাড়া কাটোয়া ১ ব্লকের গিধগ্রাম, কোশিগ্রাম ও গোয়াই অঞ্চল মিলে ১৩ মৌজায় ধানজমিতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কাটোয়া ১ ব্লকের-সহ কৃষি অধিকর্তা আজমীর মণ্ডল জানান, প্লাবনের জেরে ক্ষতির প্রাথমিকভাবে একটা রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি আরও কয়েকদিন পর আরও স্পষ্টভাবে জানা যাবে।