টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: সামনেই বোরো চাষের মরশুম! এই সময় বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের বিশাল এলাকাজুড়ে হয় চাষ। কিন্তু ফি বছর সেখানকার মানুষকে ভুগতে হয় জলের সমস্যায়। এই অবস্থায় ২৬ জানুয়ারির বদলে ১৫ জানুয়ারিতে জল ছাড়ার দাবি জানিয়ে ডিভিসির সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদ কৃষি কর্মাধ্যক্ষ জানিয়েছেন, এই বিষয়ে আগামী ৯ডিসেম্বর বৈঠক হতে চলেছে ডিভিসির সঙ্গে। সেখানেই এই সংক্রান্ত আবেদন জানানো হবে।
পাত্রসায়র ব্লকের ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে হয় বিভিন্ন ধানের চাষ। সেচের ভরসা বলতে মোট ১১টি কূপ! কিন্তু মূল সমস্যার শিকড় রয়েছে ১২২৭ নম্বর ক্যানেলে। কৃষকদের অভিযোগ, “সোনামুখী পর্যন্ত জল ঠিকই আসে। কিন্তু এরপর পাত্রসায়র পর্যন্ত জল আর এগোয় না।” এই প্রসঙ্গে স্থানীয় কৃষক মানিক মাহাতো বলেন, “আমরা প্রতি বছরই একই সমস্যায় পড়ি। সেচনালার বড় অংশ দুর্বল। উপচে পড়া জল মাঠে না গিয়ে খালে খালে নষ্ট হয়। অথচ বুকভরা আশায় অপেক্ষা করি—কবে ক্যানেলের জল পৌঁছবে।” এই বছরেও একই ছবি দেখতে হবে? আশঙ্কাও সেখানকার কৃষকরা।
জেলা পরিষদের এক কর্তা জানান, পাত্রসায়র এলাকায় সেচের সমস্যা মেটানো না গেলে ব্লকটিকে কৃষি উৎপাদনের ‘ম্যাপের মূলধারা’-য় ফেরানো যাবে না। তাঁর কথায়, “ডিভিসিকে জানানো হয়েছে, চাষি বাঁচাতে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই জল ছাড়া ছাড়া উপায় নেই।'' শুধু তাই নয়, জলাধারের ভাঙা অংশ মেরামতির দাবিও জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। সেচ দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার অবশ্য পাল্টা দাবি করেন, “জল নষ্ট হওয়ার অভিযোগ পুরোপুরি সঠিক নয়। তবে ক্যানেলের কিছু অংশে বেশ কিছু সমস্যা আছে। সেগুলি সারাইয়ের পরিকল্পনা আমরা ইতিমধ্যে পাঠিয়েছি।”
বোরো চাষ শুরু হওয়ার আগে জল পৌঁছনোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, এ কথা মেনে নিচ্ছে প্রশাসনও। যদিও জল–টানাপোড়েন কাটিয়ে পাত্রসায়রকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে তাই এবার মরিয়া জেলা পরিষদ। যদিও ৯ ডিসেম্বরের বৈঠকে এই প্রসঙ্গে ডিভিসি কি সিদ্ধান্ত নেয়, সেদিকেই নজর সবার।
