shono
Advertisement
Darjeeling tea

দার্জিলিং চায়ের সুনাম হারানোর আশঙ্কা, পাতায় মিলছে কীটনাশক! নমুনা পরীক্ষায় দুশ্চিন্তা

বারংবার সতর্ক করার পরও এমন ঘটনা উদ্বেগজনক।
Published By: Suhrid DasPosted: 06:21 PM Dec 16, 2025Updated: 06:21 PM Dec 16, 2025

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: সকালে ঘুম ভাঙতে অথবা আড্ডায় আমেজ ফেরাতে চা পান করছেন! নাকি বিষ! সম্প্রতি চা পর্ষদ বিভিন্ন কারখানা থেকে সংগ্রহ করা প্রায় সাড়ে তিনশো চায়ের নমুনা পরীক্ষা করে নিষিদ্ধ কীটনাশকের উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছে। এরপরই প্রশ্ন জোরালো হয়েছে, চা পান করা হচ্ছে, নাকি বিষ! চা পর্ষদের অভিযোগ, বারংবার সতর্ক করার পরও এমন ঘটনা উদ্বেগজনক।

Advertisement

উদ্ভুত পরিস্থিতির জেরে হিন্দুস্তান লিভারের মতো বড় ক্রেতা সংস্থাগুলো উত্তরবঙ্গ থেকে চা কেনা বন্ধ রেখে অসম থেকে কিনছে। স্বভাবতই বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র চা চাষিরা। প্রসঙ্গত, ভারতীয় চা পর্ষদ চা বাগানে ব্যবহারের জন্য ২০ ধরনের রাসায়নিক এবং কীটনাশক নিষিদ্ধ করেছে। নিষিদ্ধ রাসায়নিক এবং কীটনাশকের মধ্যে রয়েছে অ্যালড্রিন, ডাইলড্রিন, ক্যাপটোফোল, ফারবাম, সোমাজিন ইত্যাদি। কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি চালু হয়েছে নতুন ‘প্লান্ট প্রোটেকশন কোড’। সেখানে বিভিন্ন কীটনাশক অথবা রাসায়নিকের নাম ও ব্যবহারবিধি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিভিন্ন ছোট চা বাগানে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার যে বেড়েই চলছে সেটা সম্প্রতি চা পর্ষদের সংগ্রহ করা প্রায় সাড়ে তিনশো চায়ের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে স্পষ্ট।

ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মতো চা বণিকসভাগুলো সমস্যার কথা অস্বীকার করেনি। তাঁদের বক্তব্য, পোকার দাপট ঠেকাতে কিছু চা চাষি মারাত্মক হারে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। অনেকে চটজলদি সুরাহা পেতে নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করছেন। ওই কারণে চায়ের অবশিষ্টাংশের মধ্যে সেই কীটনাশকের প্রভাব থেকে যাচ্ছে। যেটা রীতিমতো বিপজ্জনক। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বেশকিছু ক্রেতা সংস্থা উত্তরের চা বলয় থেকে মুখ ফিরিয়েছে।জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, "চায়ে নিষিদ্ধ কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ মেলায় কিছু বড় সংস্থা এবছর উত্তরবঙ্গ থেকে বটলিফের চা কেনেনি।তারা অসম থেকে চা কিনছে। এটা উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের জন্য বড় অশনি সংকেত।" তবে কি নিষিদ্ধ কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ মেলার জন্য বটলিফ কারখানাগুলো দায়ী?

চা পর্ষদের শিলিগুড়ির অতিরিক্ত অধিকর্তা কমলচন্দ্র বৈশ্য জানান, কয়েকমাসে বিভিন্ন চা কারখানা থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো চায়ের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে কিছু চায়ে নিষিদ্ধ কীটনাশকের প্রভাব রয়েছে। বটলিফ কারখানাগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। যদিও উত্তরে ছড়িয়ে রয়েছে ২৭৫টি বটলিফ কারখানার কর্তৃপক্ষ সেই দায় নিতে নারাজ। তাদের দাবি, বটলিফে চা তৈরির সময় কোনও রাসায়নিক মেশানো হয় না। তাছাড়া যখন তারা কাঁচা চা পাতা কিনে থাকেন তখন সেই পাতায় নিষিদ্ধ কীটনাশক কতটা মাত্রায় রয়েছে সেটা পরীক্ষা করার মতো কোনও যন্ত্র তাদের কাছে নেই। ফলে যদি চায়ে নিষিদ্ধ কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ ধরা পড়ে সেক্ষেত্রে যারা কাঁচা চা পাতা উৎপাদন করছে তাদেরই দায় নিতে হবে। নর্থবেঙ্গল টি প্রোডিউসার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সঞ্জয় ধানুটি অবশ্য স্বীকার করেছেন, চায়ে নিষিদ্ধ কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ ধরা পড়ায় অনেক সংস্থা বটলিফের চা কেনা বন্ধ করেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সকালে ঘুম ভাঙতে অথবা আড্ডায় আমেজ ফেরাতে চা পান করছেন! নাকি বিষ!
  • সম্প্রতি চা পর্ষদ বিভিন্ন কারখানা থেকে সংগ্রহ করা প্রায় সাড়ে তিনশো চায়ের নমুনা পরীক্ষা করে নিষিদ্ধ কীটনাশকের উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছে।
Advertisement