সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চার অফ লায়নস মেন’- শার্লক হোমসের এই টানটান রহস্য গল্পটার কথা মনে পড়ছে? যেখানে মৃত স্কুলশিক্ষকের পিঠে একটু লাল দাগ ছাড়া কোনও সূত্র ছিল না? মগজাস্ত্র ব্যবহার করে হোমস কিন্তু বুঝতে পেরেছিলেন, এই হত্যা সৈকতের একদল জেলিফিশের কাজ। পিঠের ওপর সুড়সুড়ির মতো একটুখানি অনুভূতি আর লাঠির আঘাতের মতো লাল দাগ – এই জোড়া ফলাতেই মানুষকে ঠেলে দেয় মৃত্যুমুখে।
বইয়ের পাতার সেই রোমহর্ষক কাহিনী এবার বাস্তবে। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের সৈকতের জেলিফিশের ‘সুড়সুড়ি’ তে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি অন্তত ২৫০০। চিকিৎসকরা বলছেন, ব্লুবটল জেলিফিশের কাজ এটা। সমুদ্রের নীল জলের সঙ্গে রূপ মিলিয়ে সাদা, হলদেটে বালির মধ্যে নীলরঙা ছোট্ট প্রাণীগুলো ঘুরতে ঘুরতেই বিঁধিয়ে দেয় সৈকত সুন্দরীদের। অস্ট্রেলিয়ার বহুখ্যাত গোল্ড কোস্ট এবং সানশাইন বিচ ব্লুবটল জেলিফিশের বাসস্থান।মাঝেমধ্যেই সমুদ্রর জল ছেড়ে পাড়ে উঠে আসে এবং এই আক্রমণ। কেমন সেই আক্রমণের ধরন? মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য নিয়ে জলে নামা কিম্বা সৈকতে বসে থাকা মানুষজনের গায়ে শুঁড়ের ঝাপটা দেয়। অসুস্থদের শরীরে বহু ছোট ছোট দাগ দেখা গিয়েছে। সেইসঙ্গে অসহ্য ব্যথা। এই ধরন দেখে চিকিৎসকরা বলছেন, ব্লুবটল জেলিফিশের হামলায় এমন অবস্থা তাঁদের।
[৪৫টি কুমিরের সঙ্গে ঘরসংসার, দিব্য আছেন বুরুন্ডির এই বাসিন্দা]
বিশাল সমুদ্রের অতি ক্ষুদ্র জেলিফিশের শক্তি বলতে ওই শুঁড়। সেটি ব্যবহারের সময় সামান্য হলেও বিষের ক্ষরণ হয়। মানবশরীরের ওপর সেই শুঁড় আছড়ে পড়লে, সেই বিষের প্রভাবেই চামড়ায় অস্বস্তি হয়। কোনও কোনও জেলিফিশের ক্ষেত্রে সেই বিষ বেশ মারাত্মক, যা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চার অফ লায়ন্স মেন’-এর নিহত নায়কের ক্ষেত্রে। জেলিফিশের শুঁড়ের আঘাতের প্রাথমিক চিকিৎসায় অতি উপাদেয় ভিনিগার বা নোনা জল।বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রতটে থাকা জেলিফিশগুলো তেমন বিষাক্ত নয়। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি এমনই আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছে যে কুইন্সল্যান্ডের কয়েকটি সৈকত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। বন্ধ ওয়াটার সার্ফিংওয়ের মতো অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসও।
The post জেলিফিশের ‘সুড়সুড়ি’তে অসুস্থ বহু, অস্ট্রেলিয়ায় বন্ধ সৈকত ভ্রমণ appeared first on Sangbad Pratidin.