shono
Advertisement

গেছো ব্যাঙের ‘গোত্র’বাতলে ইতিহাসে পাঁচ বাঙালি গবেষক

উভচরের বৈজ্ঞানিক নাম জানেন? The post গেছো ব্যাঙের ‘গোত্র’ বাতলে ইতিহাসে পাঁচ বাঙালি গবেষক appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:05 PM Dec 05, 2019Updated: 03:52 PM Dec 05, 2019

গৌতম ব্রহ্ম: কখনও তার দেখা মিলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবারে। কখনও উত্তর ২৪ পরগনার বাদুতে কখনও তিনি রঙ্গনের ঝোপে বিরাজমান। কখনও বাঁশঝাড়ে আসীন। তিনি যেন গেছোদাদা! অনেকের কাছে ধরা দিয়েছেন। কিন্তু কেউ গা করেনি। বোঝেনি, জীবকুলের নথিভুক্ত তালিকার বাইরে তিনি। তাঁর কুলগোত্র কেউ জানে না। মানে এতদিন জানত না। এবার বাংলার সেই বিশেষ প্রজাতির গেছো ব্যাঙের পরিচয় ঘটল আন্তর্জাতিক দরবারে। জুটল স্বীকৃতি, নামও। 

Advertisement

আর এই পরিচয়পর্বের সুবাদে ইতিহাসের পাতায় নাম তুলে ফেললেন পাঁচ বাঙালি গবেষক। যাঁদের চেষ্টায় বাংলার এই অচেনা উভচরটির শিরোপাপ্রাপ্তি। পরিচয়ের আলোতে আসা। খয়েরি রংয়ের উভচরটি আদতে ‘ব্রাউন ব্লচড ট্রি ফ্রগ’ প্রজাতির। বঙ্গ সংস্রবের প্রমাণ রেখে তার বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়েছে ‘পলিপেডেটস বেঙ্গালেনসিস’। ‘জুটাক্সা’ জার্নালে সম্প্রতি বাংলার ব্যাঙের এই বিশ্ব স্বীকৃতির কথা প্রকাশিত হয়েছে।

[আরও পড়ুন : বাগবাজার ঘাট থেকে তরুণীর বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার, ট্যাটুর সূত্র ধরে তদন্তে পুলিশ]

২০১৬ সালের মাঝামাঝি বাদুর বাসিন্দা শিবাজি মিত্র ডায়মন্ড হারবারে নদীর পাড়ে প্রথম এই গেছো ব্যাঙকে দেখেন। শিবাজির কথায়, “একটি রঙ্গনের ঝোপে সন্ধ্যার পর ব্যাঙটি চোখে পড়ে। চেহারাটা একটু অদ্ভুত লাগাতে উভচর বিশেষজ্ঞ জয়াদিত্য পুরকায়স্থকে ছবি তুলে পাঠাই। অনেকদিন পর ওই একই রকম ব্যাঙ খুঁজে পাই আমার নিজের এলাকা বাদুতে, বাঁশঝাড়ে। পরের দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা কিংশুক মণ্ডল ওর গ্রাম খোর্দনহলাতে ওই রকম ব্যাঙ খুঁজে পায় ও সেটার ছবি-সহ ডাক রেকর্ড করে।”

[আরও পড়ুন : ম্যানগ্রোভ কেটে তৈরি হচ্ছে ভেড়ি, প্রতিবাদ করায় হুমকির মুখে গ্রামবাসীরা]

শিবাজি, জয়াদিত্য, কিংশুকের সঙ্গে পরে যোগ দেন অনির্বাণ চৌধুরি, মধুরিমা দাস ও ড. ইন্দ্রনীল দাস। দলগতভাবে শুরু হয় কাজ। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সুনিশ্চিত হওয়া যায়, এটি একটি নতুন প্রজাতির গেছো ব্যাঙ। সারা দুনিয়ায় ওই গোত্রের পঁচিশটি প্রজাতি রয়েছে। বাংলার প্রজাতি জুড়ে এখন সংখ্যা হল ২৬। জয়াদিত্য ও মধুরিমা অসমের বাসিন্দা। শিবাজি, অনির্বাণ, কিংশুক ও ইন্দ্রনীল বাংলার। যৌথ উদ্যোগ হলেও এটিকে বাংলার নামেই ভূষিত করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।একদল বাঙালির উদ্যোগগ প্রশংসিত হচ্ছে বিজ্ঞানীমহলে। 

[আরও পড়ুন : হায়দরাবাদ কাণ্ডের ছায়া মালদহে, গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে খুন তরুণীকে]

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, টানা তিন বছর লেগে থেকে যেভাবে শিবাজিরা নতুন প্রজাতির স্বীকৃতি আদায় করেছেন তা ঐতিহাসিক। বাংলার ব্যাঙ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল এটা কম কথা নয়। এমনটাই মনে করেন পতঙ্গ বিশারদ ইন্দ্রনীল বন্দে্যাপাধ্যায়। ইন্দ্রনীল কিছুদিন আগেই বারুইপুরের একটি লিচুবাগান থেকে ‘মিরর স্পাইডার’-এর একটি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেন।  কাজটা সহজ ছিল না। ব্যাঙটিকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করেন জয়াদিত্য। বোঝেন, উভচরের জগতে এটি একটি নতুন প্রজাতির গেছো ব্যাঙ। এরপর শুরু হয় জেনেটিক বিশ্লেষণ। নতুন প্রজাতি হিসাবে মান্যতা পেতে গেলে যা অত্যন্ত জরুরি। শিবাজি জানালেন, “আমাদের চারপাশে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রায় একই রকম দেখতে এই প্রজাতির ব্যাঙটি মিশে ছিল। বুঝতেই পারিনি।”

The post গেছো ব্যাঙের ‘গোত্র’ বাতলে ইতিহাসে পাঁচ বাঙালি গবেষক appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement