shono
Advertisement

গোটা অক্ষরে পড়বে নাতি, ফুটপাথে বসেই রামায়ণ লিখছেন ঠাকুরমা

ইচ্ছে থাকলেই তো উপায় হয়! The post গোটা অক্ষরে পড়বে নাতি, ফুটপাথে বসেই রামায়ণ লিখছেন ঠাকুরমা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:08 AM Jan 29, 2018Updated: 03:38 AM Jan 29, 2018

অর্ণব আইচ: নাতিকে রামায়ণ পড়াতে হবে। ছোট অক্ষরগুলো পড়তে পারে না সে। তাতে কী? পাশে ঠাকুরমা রয়েছেন না? মাথার উপর ছাদ নেই। ঘরও নেই। তাই রাস্তার আলোই ভরসা। এর মধ্যেই ফুটপাথে বসে নাতিদের জন্য রামায়ণ লিখে চলেছেন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা।

Advertisement

সেই কবে মেদিনীপুর থেকে মা-বাবার হাত ধরে কলকাতায় পা রেখেছিলেন তিনি। সেদিনের কথা এখন ভাল করে মনেও পড়ে না। কিন্তু এটুকু মনে পড়ে যে, গ্রামের একটি পাঠশালায় পড়তেন। ওই পাঠশালায় তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় অক্ষরগুলোর। একের পর এক অক্ষর সাজিয়ে কীভাবে বাক্য লিখতে হয়, তাও সেই পাঠশালায় শিখেছিলেন তিনি। তার পর পড়াশোনার পাট চুকে যায় তাঁর। কলকাতায় চলে আসতে হয় তাঁকে। এর পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৬০ বছর। দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর থানার আশপাশের  দোকানদাররা বৃদ্ধাকে ‘বুড়ি মাসি’ বলে ডাকেন। বিভিন্ন দোকানে কাজ করে পেট চালান।

[পাত্রী চাই কিন্তু যৌনসুখ দিতে অক্ষম, সাহসী পাত্রের বিজ্ঞাপনে হইচই]

বৃদ্ধা জানান, ছোটবেলায় যখন পাঠশালায় পড়েছেন, রামায়ণ পড়ার সুযোগ পাননি। বড় হয়ে কলকাতায় আসার পর রামায়ণগান দেখেছেন। তার পর যখন টিভিতে রামায়ণ সিরিয়াল শুরু হল, তখন কখনও দোকান আবার কখনও পরিচিত কারও বাড়িতে রামায়ণ দেখেছেন। এর পর তাঁর ছেলে বড় হয়েছে। নাতি হয়েছে। কিছুদিন আগে ‘ছোটদের রামায়ণ’ বইটি তাঁর হাতে আসে। ছবির সঙ্গে ছোট ছোট অক্ষরে লেখা রামায়ণের বর্ণনা। নিজের তৃতীয় শ্রেণির বেশি পড়াশোনা হয়নি। কিন্তু ঠাকুরমার ইচ্ছা নাতি অনেক বড় হোক। অনেক পড়াশোনা করুক। বৃদ্ধাই রামায়ণ বইটি তুলে দেন নাতির হাতে।

নাতি বইয়ের ছবি দেখতে ব্যস্ত। ঠাকুরমা বলেন, ‘শুধু ছবি দেখলেই হবে? বইটা পড়। না হলে রায়ামণ সম্পর্কে জানবি কীভাবে?’ নাতি পড়তে শুরু করে। কিন্তু বানান করে করে পড়তে যে অনেক সময় লাগে। তাই লেখা পড়ার চেয়ে ছবির উপরই নাতির আকর্ষণ বেশি। একদিন ঠাকুরমাকে বলেই ফেলে, ‘এত ছোট অক্ষর পড়তে ভাল লাগে না। বড় বড় গোটা গোটা অক্ষর হলে পড়তে পারব।’ বড় বড় অক্ষরে ছড়ার বই পাওয়া যায়। কিন্তু রামায়ণের বই নয়। তাতেও কুছ পরোয়া নেহি। নাতিকে রামায়ণ পড়াতে এবার ঠাকুরমাই লেগে পড়লেন। লেখাপড়ার অভ্যাস নেই বহুদিন। তবু নতুন করে লিখতে শুরু করলেন ‘বুড়ি মাসি’।

[বিরল পরিযায়ীদের কলরবে মুখরিত গজলডোবা ব্যারেজ, উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা]

দিন কয়েক লেগেছিল ‘অ, আ, ক, খ’ লেখা আবার অভ্যাস করতে। এর পর ওই ছোট অক্ষর দেখে দেখে খাতায় বড় বড় গোটা অক্ষরে লিখতে শুরু করলেন ‘রামায়ণ’। নাতি স্কুল থেকে ফেরার পর ফুটপাথে বসেই পড়তে শুরু করে খাতায় ঠাকুরমার লেখা গোটা গোটা অক্ষরের রামায়ণ। আর ঠাকুরমাও দুপুরের মধ্যে দোকানে দোকানে গিয়ে কাজ সেরে নেন। খাওয়াদাওয়ার পর ভাতঘুম না দিয়ে ঘণ্টা দুই বা তিনেক ধরে ধীরে ধীরে ‘রামায়ণ’ লেখা অভ্যাস করেন বৃদ্ধা। আবার কখনও রাতে রাস্তার আলোয় বসেও তিনি লিখে চলেন। বৃদ্ধা জানান, ছেলে ও পুত্রবধূ কেউ তাঁর কাছে থাকেন না। নাতিকে বৃদ্ধা রেখে দিয়েছেন নিজের কাছে। নাতিকে পড়াতে ‘নিজের লেখা’ রামায়ণ তাড়াতাড়ি শেষ করে মহাভারতে হাত দিতে চান তিনি।

[শিয়ালের কামড়ে জখম অন্তত ১৫, আতঙ্কে ঘুম উড়েছে বৈষ্ণবনগরে]

The post গোটা অক্ষরে পড়বে নাতি, ফুটপাথে বসেই রামায়ণ লিখছেন ঠাকুরমা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার