সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বেআইনি বালি পাচার হচ্ছে। পুলিশের কাছে খবর আগে থেকেই ছিল। সেই মতো বৃহস্পতিবার ভোররাতে অভিযান চালিয়ে ১২ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ছটি ট্রাক্টর ও তিনটি ট্রলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। বর্ধমান ও গলসি থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে খণ্ডঘোষ আর গলসি থানার যৌথ বাহিনী, ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে জুজুটির দামোদর নদীর ঘাটে একটি বিশেষ অভিযান চালায়। ধরা পড়ে পাচারকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, আগে বেশ কয়েকবার অভিযানের সময় ধৃতরা পালিয়ে যায়। তবে এইবার পুলিশের পাতা ফাঁদে ধরা পড়েছে তারা। অভিযানের পর বিবৃতি দিয়ে বর্ধমান পুলিশ জানিয়েছে, অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এছাড়াও বৃহস্পতিবার, পালিতপুরের কাছে বর্ধমান থানা তিনটি, গলসি থানা দুটি, দেওয়ানদিঘী থানা তিনটি ওভারলোডিং বালি বোঝাই ট্রাক আটক করেছে।
[আরও পড়ুন: বিয়ের আগের সন্তানকে পথে ফেলে দেয় প্রেমিক! দুধের শিশুকে ফিরে পেতে আদালতে মা]
দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ আসছিল জুজুটির দামোদর (Damodar River) জল প্রকল্পের কাছে বেআইনিভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। এই নিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানান খোদ বর্ধমান (Bardhaman) পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার। তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই বালি তোলার ফলে, ৩০০ কোটি টাকার বিনিময়ে পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কারণ, অবৈধ ভাবে বালি তোলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীগর্ভ। যার জেরে পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে পারে।
এছাড়াও প্রশাসনের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তিনি। সেই সভা থেকে বেরিয়ে পরেশবাবু বলেছিলেন, "জুজুটিতে দামোদর থেকে জল তোলার প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। তার চারিদিকে একশোর উপরে নৌকায় মেশিন দিয়ে বেআইনিভাবে বালি তোলা হচ্ছে। এইভাবে গ্যালারির চারদিক থেকে বালি তোলা হলে ছয়মাসের মধ্যে গ্যালারি থেকে জল উঠবে না। বরং তা ভেঙে পড়বে। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ছবি-সহ সব জানিয়ে এসেছি।" সেই সভাতে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া দাওয়াইয়ের পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ। এবার অভিযান চালাতেই ধরা পড়ল পাচারকারী দল।