দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: যত ইচ্ছে তত সংখ্যায় আর বোট, লঞ্চ ঢুকতে পারবে না সুন্দরবনে। সেই সংখ্যা বেঁধে দিল বন দপ্তর। এখন মাত্র ১৫০টি জলযান দৈনিক সুন্দরবনের নদী ও খাঁড়িতে ঢুকছে। সেই সিদ্ধান্ত থেকে শুরু হয়েছে চাপানউতোড়, ক্ষোভ।
শীতকালে সুন্দরবনে পর্যটনের এখন ভরা মরশুম। বাদাবনের সৌন্দর্য দেখতে পর্যটকরা ভিড় করছেন। কিন্তু দিন কয়েক ধরে সেইসব কিছুতেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। এখন জলযানের দৈনিক সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হল। জঙ্গলে ঢোকার জন্য অনলাইনে অনুমতি নিতে হয় প্রত্যেকটি জলযানকে। গত অক্টোবর মাস থেকে বাড়ানো হয়েছে সেই অনুমতির খরচ। পর্যটক পিছু ১৮০ টাকা করে এখন দিতে হচ্ছে। সঙ্গে বেড়েছে গাইড ও জলযানের খরচ।
জানা গিয়েছে, আগে অনলাইন অনুমতির ক্ষেত্রে এমন কোনও নিয়ম ছিল না। বিপুল সংখ্যায় বোট অতীতে সুন্দরবনের গভীরে ঢুকতে পারত। বিভিন্ন খাঁড়ি, নদীতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ছাড়পত্র ছিল। তবে কোনওভাবেই সংরক্ষিত এলাকায় যাওয়ার অনুমতি ছিল না। এবার বিভিন্ন রুতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে খবর। জলপথে সুন্দরবন দেখতে হলে এখন দিনক্ষণ জানিয়ে এই বুকিং করতে হচ্ছে। তার ফলে বহু পর্যটক টাকা দিয়েও নদীপথে সুন্দরবনের ভিতর ঘুরে দেখতে পারছেন না। টুর অপারেটরদের সঙ্গে পর্যকটকদের ঝামেলাও হচ্ছে।
এ বিষয়ে ক্যানিং লঞ্চ ইউনিয়নে সম্পাদক উপানন্দ বৈধ বলেন, "এখন সপ্তাহে শুক্রবার সুন্দরবন বন্ধ রাখা হচ্ছে। আমরা তা মেনেও নিয়েছি। কিন্তু পর্যটকদের স্বার্থে অন্তত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ পুরোপুরি জঙ্গল খোলা রাখা উচিত। সমস্ত জলযান যাতে জঙ্গলে যেতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে পর্যটকরাও সমস্যায় পড়ছেন। সমস্যা পড়ছেন বোট এবং লঞ্চ মালিকরাও।"
গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কৈলাস বিশ্বাস বলেন, বছরের সব সময় সুন্দরবনে পর্যটকরা আসেন না। শীতের মরশুমেই বেশি পর্যটক ভিড় জমান। অতিরিক্ত পর্যটক জঙ্গলে ঢুকতে পারলে তাতে সরকারের রাজস্ব আরও বাড়বে। ডিসেম্বরের এই কয়েকটা দিন নিয়ম শিথিল করা উচিত।"
কিন্তু কেন এই নিয়ম চালু করা হল? কেন জলযানের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হল? সুন্দরবনের দূষণ সম্পর্ক্বে মাঝেমধ্যেই চর্চা চলে। দূষণ নিয়ন্ত্রণের কারণেই কি এই নতুন নিয়ম? সেই চর্চা চলছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোনও সাড়া মেলেনি।