অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: আবাসনের ফ্ল্যাটে 'খুন' মাঝবয়সী ব্যক্তি। ঘটনায় আটক দুই নাবালক। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শালকিয়া এলাকায়। মৃত ওই ব্যক্তির নাম দেবব্রত পাল। পুলিশ ওই দুই নাবালককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। বচসার জেরেই কি খুন? নাকি পরিকল্পনা করে এই ঘটনা? সেই প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
শালকিয়ার কৈবর্ত্যপাড়া লেন এলাকায় ওই ছ'তলা ফ্ল্যাটবাড়ির চারতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন বছর ৪৮ বয়সের দেবব্রত দাস। তাঁর ফ্ল্যাটের উলটোদিকেই রয়েছে ওই আবাসনের সেক্রেটারি পিন্টু দাসের ফ্ল্যাট। আজ, সোমবার দেবব্রত পালের ফ্ল্যাট থেকে প্রথমে ঝগড়াঝাটি ও পরে গোঙানির আওয়াজ আসতে শুরু করে। ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। সেসময় শুনে ওই আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দারা সেখানে পৌঁছয়। ফ্ল্যাটের দরজা খোলার জন্য ধাক্কা দেওয়া হয়। কিন্তু ভিতর থেকে কেউ ওই দরজা খোলেনি। কিছু সময় পর গোঙানিও থেমে যায়।
বিপদ হয়েছে আন্দাজে ওই ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙা হয়। ভিতরে ঢুকে দেখা যায় মেঝেয় পড়ে রয়েছে দেবব্রত দাসের দেহ। তাঁর মুখ, কান-সহ একাধিক জায়গায় রক্ত, আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এরপরই ঘরে ভিতরে অন্য দু'জনকে দেখতে পান প্রতিবেশীরা। ফ্ল্যাটের বারান্দায় দেখতে পাওয়া যায় পিন্টু দাসের নাবালক ছেলেকে। ঘরের ভিতর খাটে শুয়ে মৃদু স্বরে গোঙাচ্ছিল আরও এক কিশোর। সে পিন্টু দাসের ছেলের বন্ধু। খবর দেওয়া হয় মালিপাঁচঘরা থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখে ওই ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। যে কিশোর গোঙাচ্ছিল, তাঁকে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার শারীরিক অবস্থা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। নিজেকে বাঁচাতে কি অভিনয় করছিল সে? দুই নাবালকের কথাতেও অসঙ্গতি দেখা যায়।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই দুই নাবালককে আটক করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বালিশ চাপা দিয়ে ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে। তার আগে ঘরের মধ্যে ধস্তাধস্তিও চলেছে বলে খবর। দেবব্রত দাসের মাথার পিছন-সহ দেহের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এদিন সকালে ওই ব্যক্তির ফ্ল্যাটে দুই নাবালক কী করছিল? সেই প্রশ্ন উঠেছে। দুই কিশোরকে থানায় আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, দেবব্রত একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। বছর দশেক আগে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যায়। তাঁদের একটি কন্যা সন্তানও আছে। সে তার মামাবাড়িতে থাকে। দেবব্রতের বৃদ্ধা মা ছেলের সঙ্গেই ওই ফ্ল্যাটে থাকেন। কিন্তু এখন তিনি কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তার মধ্যেই এই ঘটনা!
কী কারণে ওই খুন? বিশেষ কোনও বিষয় নিয়ে বিবাদ? নাকি অন্য কোনও বিষয় রয়েছে খুনের নেপথ্যে? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
