দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বরাবরই পৌরহিত্যের গুরুভার ব্রাহ্মণ পুরুষদের কাঁধেই বর্তায়। তিনি যুগ যে বদলে গিয়েছে। এখন আর শুধু পুরুষ নন। মহিলারাও পুজোপাঠের দায়িত্বে। সরস্বতী পুজোয় মন্ত্রোচ্চারণ করে পৌরহিত্য করল হুগলির বলাগড়ের বিজয়কৃষ্ণ মহাবিদ্যালয় ও জিরাট কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।আর এই কলেজ ও বিদ্যালয়ের দুই পুজোর ক্ষেত্রেই তন্ত্রধারক ছিলেন বাংলার অধ্যাপক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এই সরস্বতী পুজোর আয়োজনকে কেন্দ্র করে বলাগড়বাসীর মধ্যে উৎসাহের অন্ত ছিল না।
বলাগড় বিজয়কৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোর পৌরহিত্য করেন বিএ প্রথম সেমেস্টারের ছাত্রী স্নেহা মুন্সি। অন্যদিকে জিরাট কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরোহিত ছিলেন বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী তফশিলি জাতির কৃষক পরিবারের মেয়ে রিমি হালদার। প্রথমে সংস্কৃতে মন্ত্রোচ্চারণ করে বাংলায় সংকল্প প্রাণ প্রতিষ্ঠা, আবাহন, হোম আরতিতে দুই শিক্ষাক্ষেত্রের পুজো প্রাঙ্গণ রীতিমতো মুখরিত হয়ে ওঠে। ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই এদিন বাংলা মন্ত্র উচ্চারণ করে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে সরস্বতী পুজোকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেন। যা আগামী দিনে চিরাচরিত পুজোর প্রথায় বদল আনতে সক্ষম হবে।
[আরও পড়ুন: ‘পাঠান’ চলাকালীন ভেঙে পড়ল সিনেমা হলের ছাদ, কান্দিতে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি দর্শকদের]
কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় এই পুজোকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন। অন্যদিকে জিরাট কলোনি উচ্চ বিদ্যালয় এর ডঃ আবদুল শরিফ শেখ বলেন, “এভাবেই আমরা এগিয়ে যাব।” একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী রিমি হালদার বলেন, “নতুন নতুন ভাবনাচিন্তার মধ্যে দিয়ে আমরা বৃহত্তর জগতের দিকে এগিয়ে যাব।” যার উদ্যোগে এই কর্মকাণ্ড সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ব্রাহ্মণ্য মনুবাদী ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে নারীবাদী চিন্তাভাবনাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।”