দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: চলন্ত ট্রেন থেকে সন্তান কোলে ছিটকে পড়লেন মা। রক্তাক্ত অবস্থায় লাইনে পড়ে রইলেন প্রায় ঘন্টাখানেক। সাহায্য চেয়েও কারও দেখা পেলেন না। এক রত্তির কান্নার শব্দ পৌঁছল না কারও কানে। অবশেষে গুরুতর জখম অবস্থায় মহিলা নিজেই সন্তানকে কোলে নিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে পৌঁছলেন স্টেশনে। বর্তমানে তারকেশ্বর মহকুমা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মা ও সন্তান।
রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে আরামবাগের তালপুর স্টেশনে। সন্তানকে কোলে নিয়ে তারকেশ্বর থেকে ট্রেনে আরামবাগের বাড়িতে ফিরছিলেন পিরু দাসে নামে এক মহিলা। তালপুর স্টেশন ছেড়ে ট্রেন গতি তুলে কিছুটা যাওয়ার পরই আচমকা পড়ে যান তাঁরা। দীর্ঘক্ষণ লাইনে পড়ে আর্তনাদ করেন মহিলা। কাঁদতে থাকে শিশুটিও। অভিযোগ, এক ঘণ্টা সেখানে পরে থাকলেও কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। দেখা মেলেনি আরপিএফেরও। বাধ্য হয়ে ওই মহিলাই রক্তাক্ত অবস্থায় কোলে শিশুকে নিয়ে এক কিলোমিটার হেঁটে স্টেশনে পৌঁছন। এই দীর্ঘপথেও দেখা মেলেনি রেল পুলিশের। স্টেশনে যাওয়ার পর অন্য যাত্রীদের নজরে পড়লে মা ও সন্তানতে নিয়ে প্রথমে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। পরিস্থিতির অবণতি হওয়ায় তাঁদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখান থেকে আবার পাঠানো হয় তারকেশ্বর মহকুমা হাসপাতালে।
[আরও পড়ুন: ছাত্রমৃত্যুতে রণক্ষেত্র কোচবিহারের নার্সিংহোম, আক্রান্ত কোতয়ালি থানার আইসি]
পুলিশ জানিয়েছে, ট্রেনের কামরায় ওই মহিলার আরও এক ছেলে ছিল। তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পিরুদেবী এবং তাঁর ছোট ছেলের চোট গুরুতর। পরিবারের লোকের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে পুলিশ। ঘটনার জেরে রেলপুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। লাইনে কেন কোনও নজরদারি নেই আরপিএফের সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রেলের অন্দরেও। পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, কেন ওই মহিলা সাহায্য চেয়ে পেলেন না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
The post গতি বাড়তেই বিপত্তি, সন্তান কোলে চলন্ত ট্রেন থেকে ছিটকে পড়লেন বধূ appeared first on Sangbad Pratidin.
