নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পেটের টানে সৌদি আরব পাড়ি দিয়ে ফের বিপদের মুখে বাংলার শ্রমিকেরা। জানা গিয়েছে, সৌদি আরবে আটকে রাখা হয়েছে ২৫ জন যুবককে। খবর পেয়ে ছেলেকে ফিরে পেতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন সৌদি আরবে বন্দি বীরভূমের বাসিন্দা এক যুবকের মা। কিন্তু কোনও তরফ থেকেই কোনও উত্তর মেলেনি। ফলে রীতিমতো আতঙ্কের প্রহর কাটাচ্ছেন তিনি।
২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে সৌদি আরবে যান বীরভূমের মল্লারপুর গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজউদ্দিন। তার সঙ্গেই গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানার হরিপুর গ্রামের চিরঞ্জিৎ বাগদি। অভিযোগ, একটি কোম্পানিতে কাজ দেওয়ার নাম করে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে তাঁদের দিয়ে টমেটো প্যাকিংয়ের কাজ করানো হত। পরিবারের দাবি, কাজের চাপের পাশাপাশি প্রবল মানসিক চাপ দেওয়া হয় ওই শ্রমিকদের। এমনকী বাড়ি ফিরতে চাওয়ায় তাঁদের পাসপোর্ট ও কেড়ে রাখা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পরিবারের সদস্যরা জানান, ফোনে ফিরোজউদ্দিন জানান, তাঁরা মরুভূমি এলাকায় রয়েছেন। তাদের প্রথমে ভারতীয় মুদ্রায় ২৫ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হত। কিন্তু বছরখানেক ধরে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু খাবার দেওয়া হচ্ছে। যোগাযোগ করতেও দেওয়া হচ্ছে না কারও সঙ্গে। এমনকী যোগাযোগ করেছেন তা জানতে পারলে তাঁদের খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন ফিরোজউদ্দিন।
ছেলের দুর্দশা জানতে পেরে মাস দুয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লিখে ছেলেকে ফিরিয়ে আনার আরজি জানিয়েছিলেন ফিরোজের মা। কোনও সদুত্তর না পেয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলকে চিঠি লিখে গোটা বিষয়টি জানান তিনি। শ্যামাপদবাবু বলেন, “ওই মহিলার আবেদন পাওয়ার পরই আমি রাজ্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি।” ফিরোজের মা রওশনারা বিবি বলেন, “পরিবারে আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। সেই কারণেই ছেলে ভিনদেশে কাজ করতে গিয়েছিল। প্রথমদিকে প্রতি মাসে মাসে টাকা পাঠাত। কিন্তু বছরখানেক ধরে কোনও টাকা পাঠাচ্ছে না। ফলে বাড়িতে আর্থিকসংকট দেখা দিয়েছে।” রামপুরহাট মহকুমাশাসক শ্বেতা আগরওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “নবান্নে রয়েছি। ফিরে গিয়ে বিষয়টি দেখব।”
ছবি: সুশান্ত পাল
[আরও পড়ুন: কলকাতায় ফিরলেন কাশ্মীরে জঙ্গিহানায় গুলিবিদ্ধ জহিরুদ্দিন, শীঘ্রই যাবেন গ্রামে]
The post সৌদি আরবে কাজে গিয়ে বন্দি বীরভূমের যুবক, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মায়ের appeared first on Sangbad Pratidin.
