রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: জেলার সাংস্কৃতিক মহলে নজিরবিহীন ঘটনা। আলিপুরদুয়ারে বইমেলার সূচনার একদিন পরই বন্ধ হয়ে গেল মাইক, বাতিল করে দেওয়া হল অনুষ্ঠান। শেষমেশ অবশ্য মন্ত্রী উদয়ন গুহর হস্তক্ষেপে জট কেটে বইমেলা পুরোদমে শুরু হয়। মেলা চলবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে মেলার মাঝে যেভাবে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হল, তা নিয়ে সমালোচনা চলছে সাংস্কৃতিক মহলে।
বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ড মাঠে ১২ তম জেলা বইমেলার উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই বইমেলাকে জেলা সদরে না করে ব্লক স্তরে করার দাবি তুলেছিলেন তিনি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়েও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর নানারকম মন্তব্য শুরু হয়। তারপর মেলা শুরুর একদিন পর আচমকা জেলা বইমেলার মাইক বন্ধের নির্দেশ দেওয়া ঘিরে ঘোর বিতর্ক তৈরি হয়। শনিবার সকালে বইমেলায় আসা পাবলিশার্সরা জেলা বইমেলা বন্ধ করে দেন। সকালে জেলা বইমেলার গেট আটকে বিক্ষোভ দেখান প্রকাশকরা।
বইমেলার গেট আটকে বিক্ষোভ প্রকাশকদের। নিজস্ব ছবি।
আসলে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর বইমেলায় মাইক বন্ধ নিয়ে প্রশাসনের নির্দেশেই এই অশান্তি শুরু হয়। শুক্রবার এই নির্দেশ ঘোষণার পরই দু'দিন বইমেলায় সাংস্কৃতিক সব অনুষ্ঠান বাতিল করে জেলা বইমেলা কমিটি। এরপরই মেলা বন্ধ করে দেন পাবলিশার্সরা। তাঁদের বক্তব্য, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান না হলে শনি ও রবিবার মেলা জমবে না। তাঁরা ক্ষতির মুখে পড়বেন। সেই কারণে তারা মেলা খুলবেন না। সকাল থেকে বইমেলায় এসে ঘুরে যান বইপ্রেমীরা।
মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবশেষে খুলল বইমেলা। নিজস্ব ছবি।
দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে বিধায়ক মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে খোলে বইমেলা। মেলা কমিটির পক্ষ থেকে প্রকাশকদের আশ্বাস দেওয়া হয় যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হবে। তারপরই তাঁরা মেলা খুলে দেন। জেলা বইমেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ভাস্কর মজুমদারের কথায়, "প্রশাসন থেকে ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর মাইকে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় আমরা অনুষ্ঠান বাতিল করেছিলাম। আর এতেই বইমেলায় আসা পাবলিশার্সরা মেলার গেট আটকে বইমেলা বন্ধ করে দেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী ও বিধায়ক-সহ অনেকেই হস্তক্ষেপ করেন। আমরা অনুষ্ঠান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অবশেষে মেলা খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।"
