রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: তেহট্ট ১ পঞ্চায়েত সমিতির দুটি স্থায়ী সমিতির সদস্য পদে বড় জয় পেল তৃণমূল। যদিও এই জয় নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি সিপিএমের। নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল-বিজেপি জোট করে নাকি নির্বাচনের ময়দানে নেমেছে। যদিও তা একযোগে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে তৃণমূল এবং বিজেপি।
পঞ্চায়েত সমিততে স্থায়ী সমিতির সদস্য থাকে ৮ জন। তার মধ্যে বন ও ভূমির স্থায়ী সদস্য ছিলেন সুকমল বিশ্বাস। পূর্তের কর্মাধ্যক্ষও ছিলেন সুকমল। গত কয়েকদিন আগেই তিনি পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ফলে স্থায়ী সমিতির দুটি সদস্য পদ ফাঁকা হয়ে যায়। এরপরেই নির্বাচন হয় শুক্রবার। তেহট্ট ১ পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ৩৩ টি। পঞ্চায়েত প্রধান, জেলা পরিষদ সদস্য, বিধায়ক ও সাংসদ মিলিয়ে ভোটাধিকারপ্রাপ্ত সদস্য সংখ্যা ৫০। এর মধ্যে সিপিএম কংগ্রেস জোটের ১৫ টি , তৃণমূলের ১৫ টি , বিজেপির ১৯ টি।
শুক্রবার নির্বাচনের দিন উপস্থিত ছিলেন সিপিএম কংগ্রেস জোটের ১৫ জন, তৃণমূলের ১২ জন, বিজেপির ১৯ জন। বন-ভূমি ও পূর্তের দুটি ফাঁকা আসনে প্রার্থী দেয় বামেরা। অন্যদিকে, প্রার্থী দেয় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও। তবে জানা গিয়েছে, তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই নির্বাচনে কোনও প্রার্থী দেয়নি বিজেপি। শনিবার ব্লক অফিসে ছিল নির্বাচন। উপস্থিত ছিলেন ৪৫ জন সদস্য।
বন ও ভূমির স্থায়ী সদস্য পদের নির্বাচনে ভোটাভুটিতে বামপ্রার্থী শ্রাবন্তী খাঁ’কে ৩০-১৫ ভোটে পরাজিত করে সদস্য হন তৃণমূলের সুনীল দাস। একইভাবে পূর্তের সদস্য পদের নির্বাচনে বামপ্রার্থী বিশ্বজিৎ বিশ্বাসকে ২৯-১৪ ভোটে পরাজিত করে সদস্য হন তৃণমূলের গোপাল রায়। এই জয় স্পষ্ট হতেই সবুজ আবির খেলায় মেতে ওঠেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে এই জয়ের পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। জাতীয় স্তরে বিরোধী দলগুলি বিজেপির বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে ‘ইন্ডিয়া’ নামে জোট গড়েছে। তাতে বিশাল ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। সেই দল বিজেপির সঙ্গে জোট করেছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য সুবোধ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিজেপি, তৃণমূলকে সাপোর্ট করবে বলে প্রার্থী দেয়নি। এটা বোঝা যাচ্ছে যে, কয়েনের দুই পীঠের একদিকে তৃণমূল ও অপর দিকে বিজেপি।”
পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা উদয় বিশ্বাস বলেন,“ পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের দিন তৃণমূল সিপিএম এক হয়েছিল। এবং দুই দলের নেতৃত্ব আলিঙ্গন করেছিল। তা তেহট্টবাসীর অজানা নয়। এখন সিপিএমের ভ্রান্ত এবং মূল্যহীন অভিযোগ আনছে। সিপিএমের নৈতিকতা থাকলে তারা সভাপতিকে ইস্তফা দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।”
এই বিষয়ে তেহট্ট-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি দিলীপ পোদ্দার বলেন, “ভোট হয়েছে গোপন ব্যালটে। সেখানে কে কাকে ভোট দিয়েছে তা কি ভাবে বলা যায়। যারা এই ভোটে অংশগ্রহন করেছে তারা সবাই ভোটার। আর ভোটাররা তাঁদের মতামত গোপনে জানিয়েছেন। সেখানে বিজেপি তৃণমূলের গাঁটছড়া সিপিএমের আষাঢ়ে গল্প ছাড়া কিছু নয়।”
