দেব গোস্বামী, বোলপুর: অবৈধ পার্কিং ইস্যুতে ফের বিতর্ক। শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার পার্কিং ঘিরে ঝড় সোশ্যাল মিডিয়াতেও। বোলপুর-শান্তিনিকেতনে চারচাকা নিয়ে মেলায় এসে দুর্বিসহ অভিজ্ঞতা পর্যটকদের। বোলপুরে ঢুকলেই দিতে হবে ৫০ টাকা অবৈধ পুরকর। শহর থেকে বের হতে টোল লাগবে ৫০ টাকা। এবার যোগ হল পৌষমেলায় পার্কিং চার্জ। যেখানে দিতে হচ্ছে গাড়ি পিছু দুশো টাকা। এমনকি বাইকের জন্যেও ধার্য করা হয়েছে ৩০ টাকা। নিস্তার নেই পার্কিংযের খপ্পড় থেকে।
পর্যটকদের একরকম বাধ্য করা হচ্ছে টাকার বিনিময়ে গাড়ি রাখতে। বিতর্কের কারণ, পার্কিংয়ে বরাত পেয়েছে অবৈধ পুরকর আদায়কারী ব্যবসায়ী নাসির শেখ। যদিও পুরকর নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিশ্বভারতীর পার্কিং পেয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। বিশ্বভারতীতে বছর ভর পর্যটকদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য সদ্য টেন্ডার দেওয়া হয়। কিন্তু বিতর্ক উঠেছে গাড়ি রাখার জন্য পার্কিং ফি নিয়ে। যাকে ঘিরে তাঁরা কেউ প্রকাশ্যে, কেউ মেলা প্রাঙ্গণে, কেউ রাস্তায়, সোশ্যাল মাধ্যমে উগরে দিয়েছেন তাঁদের ক্ষোভ।
পূর্বপল্লির পৌষমেলা উন্মুক্ত সর্বস্তরের মানুষের জন্য। সেখানে অর্থের বিনিময়ে প্রবেশের বাধ্যবাধকতা, পার্কিং নিয়েও জোরজুলুম, ক্ষোভ চরমে। মেলায় পর্যটক ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, কাদের স্বার্থে, কোন উদ্দেশ্যে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ টেন্ডার দিয়েছে। সেই টেন্ডারের দর কি সকলের কথা ভেবে স্থির করা হয়েছে? যদিও টেন্ডার প্রসঙ্গে কোনও সদুত্তর দেয়নি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যার জেরে শান্তিনিকেতন জুড়েই একাধিক পার্কিং নিয়েই অভিযোগ তুলেছেন পর্যটক সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
কলকাতা থেকে গিয়েছেন সুবিমল বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্মৃতি রায়। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘পার্কিংয়ের নামে তোলা তুলছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কারণ রশিদে ২০০ টাকা লেখা রয়েছে। আর লেখা রয়েছে বিশ্বভারতী কার পার্কিংয়ের নামও।’’ দুর্গাপুরের শ্যামলতনু দে ও সুস্মিতা সাহা জানান, ‘‘২০০ টাকা মূল্য পার্কিং ভাড়া কোথাও শুনিনি।’’ সামাজিক মাধ্যমে মানস রায় ও সুকান্ত ঘোষ লেখেন, ‘‘কোথাও এমন পার্কিং ভাড়া নেই। বিশ্বের চতুর্থ রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত পৌষমেলার গুরুত্বের কথা মাথায় রেখেই সর্বস্তরের মিলনমেলায় পার্কিং ভাড়া ও একপ্রকার অরাজকতা বন্ধ হওয়া উচিত।’’
এই বিষয়ে একাধিকবার বিশ্বভারতীর কর্মসচিব অশোক মাহাতোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে তিনি প্রতিক্রিয়া দেননি। পার্কিং টেন্ডার পাওয়া বেসরকারি এজেন্সি সংস্থার পক্ষে নাসির শেখ বলেন, ‘‘টেন্ডার পার্কিং ভাড়া সব কিছুই ঠিক করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পার্কিং ভাড়া কমানো, বাড়ানো সবকিছুই বিশ্বভারতীর হাতে। আমরা টেন্ডার পেয়েছি। সেই মোতাবেক বিশ্বভারতীর বিভিন্ন প্রবেশপথে পার্কিং করেছি মাত্র।’’ এদিকে পার্কিংয়ের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সময় পেরিয়ে গেলেই নেওয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। এক প্রকার জুলুম করেই পার্কিংয়ে গাড়ি রাখানো হচ্ছে। বাড়তি টাকাও নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।